
রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারলে প্রিডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে গুরুতর হৃদরোগের ঝুঁকি ৫০ শতাংশেরও বেশি কমে যেতে পারে—এমন তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে দ্য ল্যানসেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রাইনোলজি জার্নালে। এটি পরিচালনা করেছেন যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকেরা।
গবেষণায় বলা হয়েছে, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে পারলে কার্যকরভাবে প্রিডায়াবেটিস উল্টে দেওয়া সম্ভব। এর ফলে হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কিংবা হার্ট ফেইলিউরের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর প্রধান কারণ হৃদরোগ। মোট মৃত্যুর প্রায় ৩২ শতাংশই ঘটে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে (সিভিডি)। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক। ডব্লিউএইচওর মতে, আচরণগত ও পরিবেশগত ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অধিকাংশ হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে প্রিডায়াবেটিসে আক্রান্তদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রিডায়াবেটিস এমন একটি অবস্থা, যেখানে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে, তবে তা টাইপ–২ ডায়াবেটিস হিসেবে ধরা হয় না। মায়ো ক্লিনিক জানায়, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন না আনলে প্রিডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের টাইপ–২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। একই সঙ্গে রক্তনালি ও কিডনির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি শুরু হয়ে যেতে পারে। তবে আশার কথা হলো—প্রিডায়াবেটিস থেকে ডায়াবেটিসে রূপান্তর অনিবার্য নয়।
গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে—শুধু ব্যায়াম, ওজন কমানো বা স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস গড়ে তোলার মতো জীবনযাত্রার পরিবর্তনই প্রিডায়াবেটিসে আক্রান্তদের হৃদরোগজনিত ঝুঁকি কমায় না। বরং রক্তে শর্করা পুরোপুরি স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে পারলেই হৃদরোগ প্রতিরোধে প্রকৃত উপকার মেলে।