হুমায়ুন আহমেদ,গল্পের জাদুকর যিনি শব্দের খেলায় মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখার অদ্ভুত ক্ষমতা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন। আজ জনপ্রিয় এই কথা সাহিত্যিকের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের ১৯শে জুলাই তার অসংখ্য ভক্তদের রেখে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন হুমায়ূন আহমেদ।

‘মৃত মানুষের জন্য আমরা অপেক্ষা করি না, আমাদের সব অপেক্ষা জীবিত মানুষের জন্য’। অপেক্ষা উপন্যাসে, মৃত্যু নিয়ে এমন ভাবনাই তুলে ধরেছেন হুমায়ুন আহমেদ। অথচ তার চলে যাওয়ার ৮ বছর পরও লক্ষ কোটি পাঠক-ভক্তরা অপেক্ষায় থাকে তার লেখা নতুন কোন বইয়ের জন্য, সম্ভব নয় জেনেও। ডিবিসি।

হুমায়ুন ভক্তরা জানায়, এ সময় তার লেখা যেসব বই আগে পড়া হয়নি সেই বইগুলো সংগ্রহ করে পড়ার চেষ্টা করছি। সেসাথে পুরনো বই যেগুলো মনের ভিতর গেঁথে আছে সেগুলো আরও একবার পড়েছি। তার এই প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

নাটক, শিশু সাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শিল্প সাহিত্যের সব ক্ষেত্রেই আছে তার বিচরণ। শুরুটা করেছিলেন কবিতা দিয়ে। লিখে গেছেন দুই শতাধিক গল্পগ্রন্থ ও উপন্যাস। এখনও বইমেলায় পাঠকদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকেন হুমায়ুন আহমেদই।

অন্য প্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম বলেন, হুমায়ুন আহ্মেদ ছিলেন লেখার জাদুকর।তার লেখার মধ্যে এমন কিছু বিষয় ছিল যা পাঠককে পছন্দভাবে স্পর্শ করতো।বাংলা সাহিত্যে এখন পর্যন্ত অন্য কোন লেখকের লেখায় আমরা এমনটা খুব কম পেয়েছি।

হুমায়ুন আহমেদ অনায়াসে অতিবাস্তব ও কাল্পনিক চরিত্রগুলোকেও বিশ্বাসযোগ্যভাবে তুলে ধরতেন, যে কারণেই তাকে বলা হয় কথার জাদুকর। সেই জাদু বাস্তবতারই দুই চরিত্র হিমু, মিসির আলী।

একটি টিভি নাটক নিয়েও যে মিছিল -সমাবেশ -আন্দোলন গড়ে উঠতে পারে, বাকের ভাই’ চরিত্রের মাধ্যমে তার উদাহরণ তৈরি করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। তাই বর্তমান সময়ে ভালো নাটক বা সিনেমার যখন আকাল, তখন দর্শক মনে উকিঁ দেয় – হুমায়ুন যদি থাকতেন..?

বর্ষা ও জোছনাপ্রিয় হুমায়ূন ভালবাসতেন সবুজ প্রকৃতি। তাই তার গড়ে তোলা নুহাসপল্লীর বৃক্ষরাজীর মাঝেই চিরশায়িত ভালবাসার এই জাদুকর। মানুষের অমরত্ব বয়সে নয়, তার কর্মে। তাই হুমায়ূন আহমেদ যুগ যুগ বেঁচে থাকবেন তার সৃষ্টিতে, কোটি ভক্তের হৃদয়ে।