- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

হত্যার জন্য অনুতপ্ত না হয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় আ.লীগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পলায়ন ও পতনের পর সাংগঠনিক বিপর্যয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। সেই বিপর্যয় কাটিয়ে আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে দলটি। দেশে-বিদেশে আত্মগোপনে থাকা দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই যোগাযোগের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে । তৃণমূলের কেউ কেউ এলাকায়ও ফিরতে শুরু করেছেন বলেও জানিয়েছেন নেতারা। তবে ছাত্র-জনতাকে হত্যার জন্য অনুতপ্ত নয় আওয়ামী লীগ।

অন্তর্বর্তী সরকার কখন ব্যর্থ প্রমাণিত হয়, এখন সেই অপেক্ষায় রয়েছে দলটি। তবে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা না চাইলে রাজনীতির মাঠে ফেরা আওয়ামী লীগের জন্য কঠিন হবে বলে জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জোবাইদা নাসরিন বলেন, ‘রাজনীতিতে ফিরে আসতে হলে আওয়ামী লীগকে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই ফিরে আসতে হবে। আর সেজন্য কর্তৃত্ববাদী শাসনের চালানোর জন্য ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ’

একই অভিমত দিয়েছেন আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‌‘ক্ষমা চাইলে তো এদেশের মানুষ ক্ষমা করে দেয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ এখনো ক্ষমা চায়নি এবং চাইবে বলেও মনে হচ্ছে না। কারণ ক্ষমা চাইলে তাদের রাজনীতিটা আর থাকে না।’

গণঅভ্যুত্থানের তিন মাস পর কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করতে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম কর্মসূচি দিতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগকে। তবে এখনই সরকারবিরোধী আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা নেই বলে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নিয়মিতভাবেই এখন আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে, আলাপ-আলোচনা হচ্ছে।’

এমনকি তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার একাধিক ফোনালাপও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। যদিও ফোনালাপগুলোর আসল কি না, বিবিসির পক্ষে স্বাধীনভাবে সেটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে দলীয় সভাপতির সঙ্গে যে যোগাযোগ হচ্ছে, সেটি অবশ্য স্বীকার করছেন নেতারা।

খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘শুধু নেতাদের সঙ্গেই না, সাধারণ কর্মী ও মানুষের সঙ্গেও আমাদের নেত্রীর যোগাযোগ রয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি আলাপ-আলোচনা করছেন এবং নির্দেশেনা দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ কর্মী নির্ভর রাজনৈতিক দল। ফলে কে নেতা বা তারা কোথায়, সেটা বড় কথা না।’

মূলত দলের ‘দিশেহারা’ নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করে ‘বিপর্যস্ত’ আওয়ামী লীগকে ফের সংগঠিত করার উদ্দেশ্যেই শেখ হাসিনা সরাসরি কথা বলছেন বলে জানাচ্ছেন তার দলের নেতারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছিলেন, ‘‌‌‌‌আত্মগোপনে থাকার পরও আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় গণমানুষের জন্য যে ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন, সেটাই আমরা গ্রহণ করব।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা