আবারো ২২ গজে অক্রিকেটীয় কাণ্ড ঘটিয়ে শিরোনামে এলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথ। সিডনি টেস্টে এবার প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের গার্ড জুতা দিয়ে মুছে দিয়েছেন তিনি। আর এ ভিডিও ক্লিপটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোয় শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। সাবেক ক্রিকেটাররা বলছেন, এটি এক ধরণের প্রতারণা। অনেকেই কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন আইসিসির দশক সেরা টেস্ট ক্রিকেটারের।

সুখে থাকতে ভুতে কিলায়, বাংলা এ প্রবাদটা খুব ভালোভাবেই জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারবেন স্টিভেন স্মিথ। না হলে, কেউ এমন কাণ্ড ঘটান! কেপটাউন কেলেঙ্কারির পর যখন গণমাধ্যমে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ক্ষমা চেয়েছিলেন অজি তারকা, তখন সমালোচনার চেয়েও সহানুভূতি প্রকাশ পেয়েছিল সবার কণ্ঠে। চিরদিনের প্রতিপক্ষরাও ক্ষমা করে দিয়েছিলেন তাদেরকে। ভালোভাবে যেন ক্রিকেট দুনিয়ায় আবারও ফিরে আসেন, তার জন্য অপেক্ষা করেছেন সবাই।

কিন্তু কি লাভ হলো তাতে! প্রতারণার অভ্যাস যে ভুলতে পারলেন না স্টিভেন স্মিথ। সিডনি টেস্টে যখন বিপদের মুখে দল, তখন ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার ইচ্ছে জাগল আইসিসির চোখে দশকসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের। সপাটে ব্যাট চালাতে থাকা রিশাভ পন্তকে আউট করতে না পেরে, উপায় খুঁজলেন বাঁকাভাবে। ড্রিংকস ব্রেক শেষে যখন সবাই যার যার ফিল্ড পজিশনে যাচ্ছিলেন তখনই পপিং ক্রিজের ওপর চলে আসেন স্মিথ। এরপর তিনি যা করেছেন তা অবাক করেছে সবাইকে। স্ট্যাম্প ক্যামেরায় যা দেখেছে পুরো বিশ্ব।

পন্তের ব্যাটিং গার্ড পা দিয়ে মুছে দেন স্টিভ। কামিন্স, হ্যাজেলউডদের বাড়তি সুবিধা দিতেই, ব্যাটসম্যানের গার্ড সরিয়ে দেন তিনি। পরে ব্যাটিং পজিশনে এসে গার্ড না দেখে অবাক হন পন্ত। যদিও পরক্ষণেই নতুন করে গার্ড এঁকে নেন তিনি।

ভিডিও ফুটেজে স্মিথের চেহারা দেখা না যাওয়ায় শুরুর দিকে অনেকেই বিশ্বাস করতে চাননি বিষয়টি। পরে ক্যামেরার অন্য ফুটেজে জার্সি নম্বর দেখে চোখ ছানাবড়া হয় সবার।

এদিকে, ভিডিও ক্লিপটি জনসম্মুখে আসার পর থেকেই সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছেন স্মিথ এবং অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। টুইট করেছেন আকাশ চোপরা এবং বীরেন্দর শেওয়াগ। তাদের দুজনের মতেই, ইচ্ছে করে এ কাজটা করেছেন স্মিথ, যা এক ধরণের প্রতারণা।

ক্রিকেটারদের মতো এত ভদ্র ভাষা ব্যবহার করেননি ভারতীয় সমর্থকরা। তারা খুব চাঁছাছোলাভাবেই বিদ্ধ করেছেন স্মিথকে। আইসিসির কাছে শাস্তির দাবিও তুলেছেন অনেকে। এতটা কঠোরভাবে না হলেও বিষয়টিকে বোকামি বলেছেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভন এবং ডেভিড লয়েড।

ঘটনাটির পর এখনও কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। আর আইসিসিও কোনো মন্তব্য করেনি তাদের সেরা ক্রিকেটারকে নিয়ে। আইন অনুযায়ী, ম্যাচ চলাকালীন কারণ ছাড়া ক্রিজে যেতে পারেন না ফিল্ডাররা।

এখন দেখার বিষয়, ভিডিওটি দেখার পর ঠিক কি শাস্তি আসে স্মিথের জন্য? নাকি এক মোড়লের বিপক্ষে আরেক মোড়লের অপরাধটি আড়াইলেই থেকে যাবে বিখ্যাত মাঙ্কি গেটের মতো।