- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

সোহরাওয়ার্দীতে করোনা রোগী ভর্তি বন্ধ

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমছে না। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গড়ে প্রতিদিন ৩০ জনেরও বেশি প্রাণ হারাচ্ছেন। নতুন শনাক্তের সংখ্যাও গড়ে প্রায় আড়াই-তিন হাজার। এরমধ্যে বেশির ভাগ আক্রান্ত রোগী রাজধানী ঢাকার। এদিকে হঠাৎ করেই করোনা রোগী ভর্তি বন্ধ করেছে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন করোনা আক্রান্ত রোগীরা। অনেকে এই হাসপাতালে ভর্তি হতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। রোগী নিয়ে পথে পথে ঘুরতে হচ্ছে স্বজনদের। গতকাল সরেজমিন ওই হাসপাতাল ঘুরে বিভিন্ন ভোগান্তির চিত্র চোখে পড়ে। রোগীরাও নানা ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন। গতকাল সকাল ৯টার দিকে হাসপাতাল গেটে দেখা হয় রফিক নামের এক রোগীর স্বজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার চাচার করোনা পজিটিভ। হঠাৎ করে তার শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। প্রচ জ্বর-শরীর ব্যথা বেড়েছে। আমরা মিরপুর থেকে এই হাতপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু রোগী ভর্তি করাতে পারিনি। এখন চিন্তা করছি কোন হাসপাতালে যাওয়া যায়। তিনি বলেন, হঠাৎ করে করোনা রোগী ভর্তি বন্ধ করা ঠিক হয়নি। এতে রোগীদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া এই হাসপাতালে আগের চেয়ে সাধারণ রোগী আসা বাড়লেও সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, সময়মতো ডাক্তার-নার্স পাওয়া যায় না। রোগীরা ডাকাডাকি করেও কাউকে পায় না। আবার ডাক্তার-নার্সরাও অনেকদূর থেকে রোগী দেখে চলে যান। করোনায় আক্রান্ত নন, কিন্তু অন্য রোগে ভুগছেন এরকম রোগীদেরও এই হাসপাতালে এসে চিকিৎসা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। চিকিৎসকের অনুপস্থিতির কারণে কোনো কারণ ছাড়াই অন্য হাসপাতালে রেফারড করা হচ্ছে রোগীদের। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। গতকাল আশিক নামের এক রোগীর স্বজন জানান, তার মা বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তারা এই হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু ডাক্তার দেখাতে পারেননি। তাদের অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তিনি বলেন, অন্যান্য রোগের সঙ্গে তার মায়ের জ্বর-গলাব্যথা রয়েছে। তাই তাদের কভিড হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, হঠাৎ করেই শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। ১৫ আগস্ট থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হয়। এই হাসপাতালে করোনা রোগীর জন্য ১৭৪টি শয্যা বরাদ্দ ছিল। এই হাসপাতালের একজন ডাক্তার জানান, হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে করোনা রোগী ভর্তি বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের টেলিফোনে করা মৌখিক নির্দেশে হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ১৫ আগস্ট থেকে হাসপাতালের কভিড ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে আইসোলেশন ওয়ার্ডের কার্যক্রম চালু থাকবে। চিঠির অনুলিপি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে। তবে এই বিষয়ে কথা বলার জন্য পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোগী কমে যাওয়ায় করোনা ইউনিট বন্ধ করা হয়েছে। করোনা রোগীর কারণে অন্য রোগীদের ভর্তি করতে সমস্যা হচ্ছে।

তাই সাধারণ রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে করোনা ইউনিট বন্ধ করা হয়েছে। তবে সরকারও করোনা হাসপাতালের সংখ্যা কমিয়ে আনার চিন্তা করছে। অন্যান্য হাসপাতালের করোনা ইউনিটও আস্তে আস্তে বন্ধ হতে পারে।সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন