- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

সেইন্ট হেলেনাতে করোনার সময়েও থামেনি ক্রিকেট!

বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসেই এক বিভীষিকাময় বছর হলো চলতি বছর । গত মার্চ মাস থেকে প্রায় চার মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি। ইংল্যান্ড-উইন্ডিজ সিরিজের মধ্য দিয়ে আবারো খেলা শুরু হলেও পুরোদমে ক্রিকেট ফেরেনি। তবে করোনার মাঝে সারাবিশ্বে ক্রিকেট থমকে গেলেও একটা জায়গায় ঠিকই নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। অঞ্চলটির নাম সেইন্ট হেলেনা।

আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝে অবস্থিত সেইন্ট হেলেনা মূলত ব্রিটিশ অধ্যুষিত একটি অঞ্চল। তবে এর নিজস্ব পতাকা, মুদ্রাসহ সবই আছে। নিজস্ব ক্রিকেট লিগও এখানে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়। মাত্র সাড়ে চার হাজার জনসংখ্যার এই অঞ্চলে ক্রিকেট বেশ জনপ্রিয় একটি খেলা।

১৫০২ সালের ২১ মে পর্তুগালের নাবিক জোয়াও দ্য নোভা সর্বপ্রথম এই অঞ্চলটি আবিষ্কার করেন। এরপর ১৬৫৮ সাল পর্যন্ত পর্তুগালের অধীনে ছিল অঞ্চলটি। ১৬৫৮ সাল থেকে ১৮১৫ সাল থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই অঞ্চলে রাজত্ব করে। এরপর ৬ বছর বিখ্যাত শাসক নেপোলিয়ন বোনাপার্ট দ্বীপরাষ্ট্রিটি শাসন করেন।

এভাবেই ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশদের বিশেষ কলোনি হিসেবে সেইন্ট হেলেনা শাসিত হয়। সেবছর ইংল্যান্ডের জাতীয়তাবাদী আইনের ফলে স্বায়ত্তশাসকের মাধ্যমে এই অঞ্চল উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। বর্তমানে একজন গভর্নর, কমান্ডার-ইন-চিফ ও নির্বাচিত এক্সিকিউটিভ সেইন্ট হেলেনার যাবতীয় শাসনকার্য পরিচালনা করে থাকেন।

সারা পৃথিবী যখন করোনার আঘাতে বিপন্ন তখনও ঠিকই সেইন্ট হেলেনায় ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে। বড় পাহাড়ের বুক চিরে অনিন্দ্যসুন্দর একটি স্টেডিয়ামও তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই আয়োজিত হয় সকল ক্রিকেট ম্যাচ।

প্রতিবছর এখানে নিয়ম করে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়জন করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ৩৫ ওভারের ক্রিকেট লিগ, আরএমএস টি২০ কাপ, জেলাভিত্তিক টুর্নামেন্ট, ২৫ ওভারের নকআউট টুর্নামেন্ট, জেলাভিত্তিক টি২০ লিগ ইত্যাদি।

করোনার এই সময়ে সম্প্রতি সেইন্ট হেলেনায় টি২০ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের আসরের উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালে মাত্র ৪ রানে জয় পেয়েছে চ্যালেঞ্জার্স। ফাইনালে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১২১ রান সংগ্রহ করে দলটি। জবাবে একটা পর্যায়ে বেশ শক্ত অবস্থানে ছিল প্রতিপক্ষ লেভেলউড অলস্টার্স। ১৮ ওভার শেষে দলটির রান ছিল ১১৫। এমতাবস্থায় স্তীরে এসে তরী ডোবার মতো ১১৭ রানে অল আউট হয়ে যায় তারা।

সেইন্ট হেলেনা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেরেক রিচার্ডস এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাদের এই দ্বীপে কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা ও অনুশীলনের ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল এবং সফলভাবে তারা টি২০ টুর্নামেন্টটি আয়োজন করতে পেরেছেন।

ভবিষ্যতে সেইন্ট হেলেনার ক্রিকেট আরো উন্নত অবস্থায় যাবে এটাই দেশটির জনগণের প্রত্যাশা। ভারতীয় উপমহাদেশের মতো সেখানেও ক্রিকেট তাদের সংস্কৃতির একটা অংশ হয়ে গেছে। ক্রিকেট দিয়েই বিশ্বমঞ্চে নিজেদের মেলে ধরতে চান স্থানীয়রা। একদিন সত্যিই ক্রিকেটে বিশ্বজয় করবে সেইন্ট হেলেনা এটাই প্রত্যাশা।