মার্কিন ডলারের বিপরীতে সর্বকালের সর্বনিম্নে নেমেছে ভারতীয় মুদ্রা রুপির মান। প্রথমবারের মতো এক ডলারের বিপরীতে ৮৫ দশমিক ০৬ রুপিতে নেমে এসেছে বাজারদর।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রথমবারের মতো মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। ফেডারেল রিজার্ভ আগামী বছর সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দেওয়ার পর এ ঘটনা ঘটলো।
জানা গেছে, ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির দর পতন চলমান। তবে বৃহস্পতিবার মুদ্রাটি ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে। এদিন ভারতীয় মুদ্রার দর কমে প্রতি ডলার হয় ৮৫ দশমিক ০৬ রুপি। গত বুধবার তা ৮৪ দশমিক ৯৬ রুপি ও মঙ্গলবার ৮৪ দশমিক ৯০ রুপি ছিল।
জুলাই-সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়া, শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ চলে যাওয়া ও বাণিজ্যঘাটতি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে রুপির এই পতন হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস।
নভেম্বর মাসে ভারতের বাণিজ্যঘাটতি ৩৭ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৭৮৪ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে, অক্টোবর মাসে যা ছিল ২৭ দশমিক ১৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৭১৪ কোটি ডলার। একদিকে স্বর্ণ আমদানি বাড়ছে, আরেক দিকে রপ্তানির দুর্বলতা বাড়ছে, এই দুটি কারণে বাণিজ্যঘাটতি বেড়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর শুল্ক বাড়ালে আরও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ভারতের রপ্তানি।
শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার কমানোর কথা ঘোষণা করতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার প্রায় ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট কমানো হতে পারে। এতে দেশটিতে অর্থের সঞ্চালন বাড়বে। আরও চাঙা হবে শেয়ারবাজার।
বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, প্রাথমিকভাবে শক্তিশালী অর্থনীতি এবং সুদের হার কমানোর কারণে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ডলারের প্রতিপত্তি অব্যাহত থাকবে। নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির দর হু হু করে কমছে। ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকেও মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বড় একটি অংশ। অবিলম্বে পরিস্থিতির বদল না হলে তা আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিএনবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে ফেডারেল রিজার্ভ দুবার নীতি সুদহার কমাতে পারে, যদিও এর আগে তারা চারবার পর্যন্ত সুদহার হ্রাসের আভাস দিয়েছিল। ২০২৫ সালে ২ দশমিক ৫ শতাংশ গড় মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস দিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। সংগত কারণে নীতি সুদ বেশি কমাবে না তারা।