বর্তমান সময়ে ভুল খাদ্যাভ্যাস আর অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে উচ্চ কোলেস্টেরল একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শরীরে কোলেস্টেরল থাকলেই যে বিপদ, এমন কিন্তু নয়। ভালো-খারাপ দুই ধরণের কোলেস্টেরলের মধ্যে ভালো কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। শারীরিক ক্রিয়াকলাপের যত্ন নেওয়া এবং এমন খাবার খাওয়া যা কোলেস্টেরল দ্রুত কমতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে, তা একটি দরজার মতো কাজ করে। যে দরজা দিয়ে অনায়াসেই ঢুকে পড়ে আরও অনেক রোগ। তাই প্রথম দিকেই শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে রোগীকে অপ্রত্যাশিত মৃত্যু চারদিক থেকে ঘিরে ধরবে। শরীরের উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে যথাযথ ডায়েট ও ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একটি সঠিক ডায়েট লিস্ট আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ওষুধ ছাড়া। এ জন্য ডায়েটে নিয়মিত রাখতে হবে ৫টি খাবার। এগুলো হলো-
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: ওমেগা-৩ ফ্যাটি আ্যসিড রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষভাবে কার্যকরী। তাই শরীরে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের চাহিদা পূরণ করতে নিয়মিত ফ্ল্যাক্স সিড, আখরোট, বাদাম, সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাহলেই নিয়মিত নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল।
উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার: শরীরে খারাপ কোলেস্টেররের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলে ডায়েটে রাখতে পারেন উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে সিরিয়াল, ওটস, বাজরা, বার্লি ইত্যাদি। এছাড়া ভাতের সঙ্গে বাড়িয়ে দিন সবজি খাওয়ার পরিমাণ।
পেকটিন সমৃদ্ধ খাবার: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেকটিন সমৃদ্ধ খাবারেও খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়। তাই পেকটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে বেশ কিছু ফল ডায়েটে রাখতে পারেন। যেমন আপেল, আঙুর, স্ট্রবেরি ও সাইট্রাস ফল।
পেয়ারা: পেয়ারায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে জমে থাকা নানা রকম দূষিত পদার্থ বাইরে বের করে দেয়। পেয়ারার প্রচুর পরিমাণে থাকা ফাইবার কোলেস্টেরল আটকানোর সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ফাইবারে ভরা পেয়ারা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতেও সাহায্য করে।
রসুন: রসুনও শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে পারে ম্যাজিকের মতো। এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। শুধু তা-ই নয়, ওবেসিটির মতো ক্ষতিকর অসুখ, হার্ট অ্যাটাক এমনকি স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমাতে পারে রসুন।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকরা প্রায়ই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে সব ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই কোলেস্টেরল কমাতে ওষুধে নির্ভর না হয়ে ভরসা রাখতে পারেন এই পাঁচ খাবারে।