
সদ্যপ্রয়াত হেফাজতে ইসলামের আমীর আহমদ শফীর মৃতদেহ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পৌঁছানোর আগেই সেখানকার জানাজায় যোগ দিতে অনুসারীদের ঢল নেমেছে। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য।
অতিমাত্রায় ভিড় তৈরি হওয়ার কারণে হাটহাজারী এলাকায় সড়কপথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এলাকাটি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের উপরে অবস্থিত হওয়ায় এই সড়কপথে জেলাদুটির মধ্যেকার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
সকাল নটা নাগাদ আহমদ শফীর মৃতদেহ সকাল হাটহাজারীতে পৌঁছেছে।
ছাত্র আন্দোলনের জের ধরে হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালকের পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। ঢাকার একটি হাসাপাতালে গতকাল (শুক্রবার) মৃত্যু হয় তাঁর।
তার ছেলে আনিস মাদানী গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণেই জানাজা ও দাফন হবে তাঁর।
হাটাহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমীন বিবিসিকে জানান, দুপুরে জানাজা শেষে সেখানে দাফনের সব প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
জানাজায় যোগ দেয়ার জন্য সারা দেশ থেকে অনুসারীরা আসছেন উল্লেখ করে মি. আমীন বলেন, “এলাকা লোকে লোকারণ্য”।
পাণ্ডিত্য আর নাস্তিক ইস্যুই কওমি ধারার একক নেতায় পরিণত করেছিলো আহমদ শফীকে
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক জানিয়েছেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র্যাব পুলিশ ছাড়াও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে পুরো এলাকায়।
“অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে আমরা বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি যাতে করে সবকিছু শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলার সাথে অনুষ্ঠিত হতে পারে,” বলছেন তিনি।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও সব প্রস্তুতিও স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে চলেছে।
এর আগে বেলা সাড়ে এগারটার দিকে স্থানীয় সাংবাদিক আবু তালেব বিবিসি বাংলাকে জানান আহমদ শফীর অনুসারীতে সয়লাব হয়ে গেছে হাটহাজারী উপজেলা এলাকা।
সব দোকান পাট ও যান চলাচল বন্ধ আছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ সকালেই চট্টগ্রাম -খাগড়াছড়ি মহাসড়ক হাটহাজারী অংশে যান বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
ফলে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এসে বেশ দূর থেকেই হেঁটে মাদ্রাসার দিকে আসছেন।
অন্যদিকে সকাল নয়টার দিকে পুলিশী প্রহরায় আহমদ শফীর মৃতদেহ হাটহাজারী পৌঁছানোর পর প্রথমে নেয়া হয় ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকায় তাঁর অস্থায়ী বাড়িতে।
সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর মৃতদেহ নেয়া হয় হাটবাজার মাদ্রাসায় এবং সেখানে তাঁর কার্যালয়ের পাশেই মৃতদেহ রাখায়।
“অসংখ্য শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ তার অনুরাগীরা সেখানে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান,” বলছেন মিস্টার তালেব।
তিনি জানান ভিড়ের কারণে কয়েকবার মাদ্রাসার গেইট বন্ধ করে দিতে হয়েছে এবং ভিড়ের চাপে বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছে।