যেসব ভুলের কারণে আপনার প্রাচুর্যে ভরা ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে, সেরকম কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হলো। আপনার যদি অর্থ সমস্যা লেগেই থাকে তাহলে সেই কারণগুলো জেনে নিন-

১. বিনিয়োগ করার চেয়ে জমিয়ে রাখার প্রবণতা বেশি: টাকা জমিয়ে রাখতে না চেয়ে কিভাবে উপার্জন বাড়ানো যায় সেদিকে মনযোগ দেয়া উচিত। ধনী হওয়ার জন্য সঞ্চয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সঞ্চয়ের প্রতি মনযোগ দিতে গিয়ে অর্থ বিনিয়োগ করাকে অবহেলা করবেন না।

২. আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি: আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করার অভ্যাস থাকলে আপনি কখনোই ধনী হতে পারবেন না। এমনকি আয় দিন দিন বাড়তে থাকার সুবাদেও নতুন খরচের খাতা খুলবেন না। জীবন যাত্রার মান ব্যয়বহুল করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন।

৩. ঘণ্টা হিসেবে পারিশ্রমিক চাচ্ছেন: বেশিরভাগ লোক ঘণ্টা হিসেবে অথবা মাস হিসেবে পারিশ্রমিক চায়। আর ধনীরা পারিশ্রমিক অথবা লাভ চায় কাজের ওপর। যত কাজ করতে পারবে তত টাকা দিতে হবে, এরকম শর্তে। ধনী মানুষজন কিছুটা স্বাধীনচেতা আর স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়।

৪. বিনিয়োগে অনাগ্রহ: বেশি উপার্জনের একটা সহজ উপায় হলো, অতিরিক্ত সময়ের সদ্ব্যবহার করুন। এটাই আপনার প্রথম বিনিয়োগ, যত তাড়াতাড়ি শুরু করবেন ততই ভালো। একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে, ‘বেশিরভাগ কোটিপতিরা অথবা ধনীরা প্রতিবছর তাদের নিজস্ব আয়ের ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করে।

৫. নিজের কোনো স্বপ্ন নেই: আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে কাজকে ভালোবাসতে হবে। তার মানে আপনার নিজস্ব স্বপ্ন থাকতে হবে। লক্ষ্য থাকতে হবে। নিজের চেষ্টায় যারা বড় লোক হয়েছেন তাদের নিয়ে পাঁচ বছর ধরে গবেষণা করেছেন থমাস কোরল নামের একজন গবেষক। তিনি বলেন, বেশিরভাগ মানুষই অন্যের স্বপ্নের জন্য কাজ করে এবং এটাই তাদের বড় ধরনের ভুল। নিজের পছন্দের পেশায় এসেও যখন অন্যের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে হয় তখন বিতৃষ্ণায় হাঁপিয়ে ওঠা ছাড়া আর উপায় থাকে না।

৬. খরচ করার পর বাকী অংশ সঞ্চয় না করা: আপনি যদি ধনী হতে চান, তাহলে প্রথম সুযোগেই নিজেকে পুরস্কৃত করুন। ডেভিড ব্যাচ নামের একজন মিলিওনিয়ার তার ‘দ্য অটোমেটিক মিলিওনিয়ার’ বইয়ে উল্লেখ করেন, ‘বেশির ভাগ মানুষই পারিশ্রমিক বা লভ্যাংশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনজন ও অন্যান্য পরিচিতদের জন্য কেনাকাটা করে, তারপর বাড়ি ভাড়া, ক্রেডিট কার্ড বিল, টেলিফোন বিল ইত্যাদি ইত্যাদি।’ সব বিল পরিশোধ করে যা থাকে তাই সঞ্চয় না করে বরং সঞ্চয় করার পর অবশিষ্টাংশ খরচ করুন। অথবা খরচের বাজেট করে প্রথমেই সঞ্চয় নিশ্চিত করুন।

৭. বুদ্ধিহীন গাধার খাটুনি: স্কুলে আমরা শিখেছি যে, যে যত পরিশ্রম করে জীবনে সে তত এগিয়ে যায়। ‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি’ এই ভাবসম্প্রসারণের সঙ্গে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। রিক এডেলম্যান নামের একজন ফিন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজারের মতে, ‘স্কুল জীবনের এই উপদেশগুলো পরিপূর্ণ না, বাকী অর্ধেক স্কুল থেকে শেখা সম্ভব হয়নি, বাস্তব জীবনে শুধু বেশি বেশি পরিশ্রম করলেই ধনী হওয়া যায় না অর্থাৎ গায়ে খাটলেই ধনী হওয়া যায় না।’ এডেলম্যানের মতে, ধনী হওয়ার জন্য পরিশ্রম করার পাশাপাশি আপনাকে জানতে হবে, কিভাবে কাজ করলে ভালো মানের ফসল দ্রুত ঘরে তোলা যাবে অর্থাৎ পরিশ্রম করার প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের বুদ্ধিকেও কাজে লাগাতে হবে।

সূত্র: জি ২৪ ঘন্টা