- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

যে কারণে নারীরা কিডনি রোগে ভোগেন

বেশিরভাগ নারী কম-বেশি নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যথেষ্ট উদাসীন। তার ওপর আবার সচেতনতার অভাবে উপসর্গ এড়িয়ে যান অনেকেই। তবে একটু সতর্ক থাকলেই কিডনির ক্রনিক অসুখ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সাধারণত কিডনি রোগ ধীরে ধীরে গ্রাস করে। এর লক্ষণ বুঝতে বুঝতেই সময় পেরিয়ে যায়। বিশেষ করে নারীরাই এ রোগে বেশি ভুক্তভোগী— এমনটাই দাবি করা হয়েছে একাধিক সমীক্ষায়। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর নেফ্রোলজি এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য এমনটাই বলছে।

প্রত্যেক বছর কিডনির ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের প্রায় ৬ লাখ নারীর মৃত্যু হয়। এতে বোঝা যায়, রোগের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। তবে সচেতন হলেন তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

চলুন জানা যাক, নারীরাই কেন এ রোগে বেশি ভোগেন—

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণা সূত্রে জানা গেছে, শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক কারণেও নারীরা কিডনির ক্রনিক রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে— অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ আর ডায়াবেটিস। অনেক সময় প্রেশার ও সুগার থাকা সত্ত্বেও রোগী নিজেই জানেন না যে, তার এমন অসুখ রয়েছে। যখন ধরা পড়ে, তখন কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গ বিকল হওয়া শুরু করে। আর বিশেষ করে এটি নারীরা অসুস্থ না হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। এ কারণে কিডনির রোগের প্রকোপ দিন দিন বাড়তে থাকে।

কারণ লুপাস নেফ্রাইটিস নামে এক ধরনের অটোইমিউন ডিজিজ ও মূত্রনালির সংক্রমণ নারীরই বেশি হয়। আর এর থেকেই ক্রনিক কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়ে। আবার দেখা গেছে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রক্তচাপের হেরফের হলে এবং মূত্রনালির সংক্রমণ ঘন ঘন হলে কিডনির রোগ হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

মুক্তি মিলবে কীভাবে—

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। যদি সম্ভব হয়, গ্লাস মেপে মেপে প্রতিদিন পানি খান। অবশ্য কতটা পানি আপনার সারা দিনে প্রয়োজন, তা চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিলে ভালো হয়।

নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। আর ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে কিডনির অসুখ থাবা বসাতে পারে না। কারণ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। লবণ ও চিনি খাওয়ার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। যদি সম্ভব হয় ভাতে লবণ খাওয়া ছেড়ে দিন। চিনি একেবারেই না। আর অত্যধিক ধূমপান ও অ্যালকোহলের নেশাও বিপজ্জনক, তা পরিহার করুন।

এ ছাড়া প্রাণিজ প্রোটিন দুর্বল কিডনির ওপর বাড়তি চাপ ফেলে। তাই মাছ, ডিম ও চিকেন খেতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণে। কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে জানাতে ভুলবেন না।

নিয়মিত চেকআপ করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ ওষুধের সাহায্যে প্রেশার ও সুগার নিয়ন্ত্রণ না করলে কিডনির কর্মক্ষমতা দিন দিন কমতে শুরু করবে। তাই যাদের এই দুটি সমস্যা আছে, তাদের কোনো উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক, বছরে অনন্ত একবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া, সেই সঙ্গে রুটিন ইউরিন টেস্ট, ইউরিয়া ক্রিয়েটিনিন ও অ্যালবুমিন পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।