মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো মস্তিষ্ক। এটি আমাদের বুদ্ধিমত্তার উৎস। আমাদের সমস্ত স্মৃতি মস্তিষ্ক ধারণ করে রাখে। মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন রকম চেষ্টা করে থাকেন। তবে কিছু উপায়েও আপনি বাড়াতে পারেন মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা।
চুপ থাকা
বিজ্ঞান বলে চুপ করে থাকার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এতে শরীর যেমন ভেতর থেকে তরতাজা হয়ে ওঠে, তেমনি মানসিক চাপও
অনেক কমে যায়। আপনি যত চুপ থাকবেন ততই নিঃশব্দে থাকবেন আর তত মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়বে। আর এমনটা হলে বাড়বে মনোসংযোগও। দিনের শুরুতে মাত্র তিন মিনিট চুপ থাকুন। তাহলেই দেখবেন আপনার কর্মক্ষমতা কতটা বেড়ে যাবে।
ব্যায়াম করা
একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে প্রতিদিন যদি নিয়ম করে যোগ ব্যায়াম করা যায়, তাহলে মস্তিষ্কে নতুন কোষের জন্ম হয়। এর ফলে আমাদের নতুন কিছু শেখার ক্ষমতা বেড়ে যায় ও স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে।
সঠিক খাবার গ্রহণ
আমাদের খাবারের ২০ ভাগ শর্করা এবং শক্তি আপনার মস্তিষ্কে যায়। এ কারণে আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নির্ভর করে দেহের গ্লুকোজের পরিমাণের ওপর। শরীরে গ্লুকোজের মাত্রায় হেরফের হলে মনেও দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। আমরা যখন পছন্দের খাবার খাই তখন আমাদের মস্তিষ্কে ‘ডোপামিন’ নামে এক ধরনের রাসায়নিক নির্গত হয়। এর কারণে আমরা খাওয়ার সময় শান্তি অনুভব করি। কিন্তু মস্তিষ্কের শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশি আপনার পেটের দিকেও নজর রাখতে হবে। মানুষের দেহের পরিপাকতন্ত্রে একশো ট্রিলিয়নেরও বেশি অণুজীব বসবাস করে। এরা আপনার মস্তিষ্কের সঙ্গেও সংযোগ রক্ষা করে। মগজের সুস্থতার জন্য এই অণুজীবগুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা খুব জরুরি। পাকস্থলীকে বলা যায় ‘দ্বিতীয় মস্তিষ্ক’।
নতুন কিছু করার চেষ্টা
মগজের শক্তি বৃদ্ধির একটা পথ হলও নতুন কোন কাজ করার জন্য মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জ করা। ছবি আঁকা কিংবা বিদেশি ভাষা শিক্ষার মধ্য দিয়ে এটা করা সম্ভব। নিজে কিংবা বন্ধুদের সাথে নিয়ে অনলাইন গেমস খেলতে পারেন। শুধু নিজেকে চ্যালেঞ্জ করাই না, এর মধ্য দিয়ে অন্যদের সাথে সামাজিক যোগাযোগও বাড়ে।
ব্যস্ততা থেকে অবসর নেওয়া
স্বল্প মাত্রার মানসিক চাপ স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এতে বিপদের সময় বা জরুরি প্রয়োজনে পরিস্থিতিকে দ্রুত মোকাবেলার শক্তি পাওয়া যায়। কএটি কর্টিসল নামে এক ধরনের হরমোনের নিঃসরণকে সহায়তা করে যা সাময়িকভাবে আমাদেরকে উজ্জীবিত করে এবং কোনও কিছুর ওপর মনোযোগ দিতে সাহায্য করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ মস্তিষ্কের জন্য খারাপ প্রভাব ফেলে। সুতরাং, কাজের ফাঁকে অবসরের সময় বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যদি আপনার সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং মস্তিষ্ককে শান্ত করাটা কঠিন মনে হয়, তাহলে যোগব্যায়াম কিংবা মাইন্ডফুলনেস চর্চার সাহায্য নিতে পারেন। এগুলো আপনার দেহের স্ট্রেস হরমোন কমাতে সাহায্য করবে।