প্রায় আড়াই বছর ধরে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পড়ে আছে মার্কিন নাগরিক রবার্ট বারকারের মরদেহ। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে বারবার চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি বলে দাবি রবার্টের স্ত্রী মাজেদা খাতুনের। এমনকি মার্কিন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

এদিকে, ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান জানান, রবার্টের মরদেহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে থানা ও মার্কিন দূতাবাসে আবেদন করবেন তারা।

কোনো এক অদৃশ্য কারণে দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের ফ্রিজে পড়ে আছে মার্কিন নাগরিক রবার্ট মাইরোন বারকারের মরদেহ। ২০১৮ সালের ২৫ মে হৃদরোগে মৃত্যু হলেও বিদেশি নাগরিক হওয়ায় এরপর থেকেই মর্গে রয়েছে রবার্টের মরদেহ।

রাজধানীর দক্ষিণ-খান থানা এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি হাসপাতালের সাবেক নার্স মাজেদা খাতুনের দাবি, ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক মার্কিন নাগরিক রবার্ট মাইরোন বারকারের সঙ্গে খৃষ্টধর্ম অনুযায়ী বিয়ে হয় তার। এরপর থেকে মাজেদার সঙ্গেই সংসার করতেন এই রবার্ট। যিনি পেশায় একজন বিদেশি উন্নয়নকর্মী হলেও রবার্ট কোন এনজিওতে কাজ করতেন তা জানাতে পারেননি স্ত্রী মাজেদা।

সময় সংবাদকে তিনি জানান, রবার্ট বারকারের মৃত্যুর পরই তার মার্কিন পরিবারের কাছে লাশ ফিরিয়ে দিতে দক্ষিণ-খান থানায় জিডি করার মাধ্যমে লাশ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল মর্গে। এরপর মার্কিন অ্যাম্বাসি কিংবা রবার্টের মূল পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও লাশ ফিরিয়ে দিতে ব্যর্থ হন মাজেদা।

মাজেদা খাতুন বলেন, তিন/চারবার যোগাযোগ করেছি। তাদের ফোন বন্ধ, সংযোগ পাওয়া যায় না। আমি আর কি করতে পারি বলুন? মূলত দূতাবাসের গাফিলতির কারণেই আমি লাশটি পাচ্ছি না। আমাকে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হোক।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলছেন, মার্কিন নাগরিকের মরদেহ হস্তান্তরের জন্য শিগগিরই তারা আবেদন করবেন।

সময় সংবাদকে তিনি বলেন, আমরা দূতাবাসকে চিঠি দেব। মার্কিন নাগরিকের লাশটি নিয়ে গেলে আমাদের জন্যেও সুবিধা হয়। কিন্তু আমাকে আগে চিঠি দিতে হবে পুলিশের কাছে।

দক্ষিণ-খান থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও দিতে পারেননি এর সদুত্তর।

এ প্রসঙ্গে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের জনসংযোগ কর্মকর্তা সময় সংবাদকে জানিয়েছেন, মার্কিন নাগরিকের মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে হলে সংশ্লিষ্টদের কাছে ই মেইল করতে হবে। মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে তারা উত্তর দেবেন বলে জানান তিনি।