- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে

যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় আলোচনার অগ্রগতি ঘটছে। এছাড়াও কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে, একটি ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল বর্তমানে কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থান করছে। গাজা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে দীর্ঘ অচলাবস্থার পর নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ফিলিস্তিনি পক্ষের একজন সিনিয়র আলোচক বিবিসিকে জানিয়েছেন, আলোচনাটি এখন ‘নির্ধারণী ও চূড়ান্ত পর্যায়ে’ পৌঁছেছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ জানিয়েছেন, ‘আমরা কখনো এতটা কাছাকাছি পৌঁছায়নি।’ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, হামাসকে সামরিকভাবে পরাজিত করার পর গাজায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকবে।

ফিলিস্তিনি পক্ষ তিন-পর্যায়ের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেছে, প্রথম ধাপে ৪৫ দিনের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক এবং নারী সেনাদের মুক্তি। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের কেন্দ্র, উপকূলীয় সড়ক এবং মিশরের সীমান্ত বরাবর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকে সরে যাবে। দ্বিতীয় ধাপে বাকি জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার এবং তৃতীয় ধাপে যুদ্ধের সম্পূর্ণ সমাপ্তি।

ইসরায়েলের মতে, গাজায় আটক ৯৬ জন জিম্মির মধ্যে ৬২ জন জীবিত রয়েছেন। ইতিমধ্যে ইসরায়েলি অভিযান বা আলোচনার মাধ্যমে ১০০ জনের বেশি জিম্মিকে মুক্ত করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায়, যাতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫৩ জনকে জিম্মি করা হয়। হামাসের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে অসুস্থ এবং প্রবীণ জিম্মিদের একটি তালিকা মিশরীয় গোয়েন্দাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৪৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য মনে করে। গাজার ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। খাদ্য সংকট এবং ধ্বংসযজ্ঞ পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের বসবাসকে আরও জটিল করে তুলেছে।

নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের পর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত হয়েছে। তবে ট্রাম্প সম্প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘যুদ্ধবিরতির চুক্তি আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই সম্পন্ন হওয়া উচিত, অন্যথায় পরিণতি ভালো হবে না।’

গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান আলোচনা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নির্ভর করছে উভয় পক্ষের রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর ভূমিকার ওপর।