- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

ব্যবসায়ীকে টুকরো করে হত্যার মূলহোতা যা বলল

রাজধানীর দক্ষিণখানে ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী হেলালকে টুকরো করে হত্যার মূল হোতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তি হলেন- চার্লস রূপম সরকার। গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন। পরে রূপমকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন বিচারক। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সাঈদ এ আদেশ দেন। এর আগে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৫০ হাজার টাকার লোভে চার্লস রূপম নিজের বাসায় ডেকে নিয়ে হেলালকে হত্যা করে। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে পরে বৈদ্যুতিক তার পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ বটি দিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে একেক জায়গায় একেকটি অংশ ফেলে রেখে আসেন রূপম। হত্যায় তাকে সহযোগিতা করে স্ত্রী ও শাশুড়ি। ওই দুজন আগেই গ্রেফতার হন। তারা ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ১৫ জুন দক্ষিণখান ও বিমানবন্দর এলাকায় হেলালের লাশের খন্ডিত অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর হত্যার রহস্য উদঘাটনে থানা পুলিশের পাশাপাশি মাঠে নামে ডিবি পুলিশ। জানা গেছে, নিহত হেলাল নারায়ণগঞ্জের একটা মাদ্রাসায় ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে তিনি দক্ষিণখান এলাকায় মোবাইল রিচার্জের ব্যবসা করতেন। সম্প্রতি মোবাইলের সিম, ফ্লেক্সিলোডের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য খাতা, কলম, স্টেশনারি এবং খেলনাসামগ্রীর ব্যবসা করে আসছিলেন।
ডিবি পুলিশ জানায়, গ্রেফতারের পর রূপম সরকার প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। পূর্বপরিচিত হেলালের কাছে অনেক টাকা-পয়সা আছে, এই ভেবে তার টাকা আত্মসাৎ করার জন্যই তিনি এই হত্যাকান্ড ঘটান। হত্যাকান্ডের দিন দুপুর বেলা ফেসবুক মেসেঞ্জারে কল করে হেলালকে ব্যবহৃত ফটোস্ট্যাট মেশিন কিনতে যাওয়ার কথা বলে বাসায় আসতে বলেন রূপম। বাসায় এলে রূপম ও তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার ওরফে মনি সরকার হেলালকে চা পান করতে দেন। চা তৈরি করার সময় রূপম চায়ের মধ্যে দুটি ঘুমের বড়ি গুঁড়ো করে মিশিয়ে দেন। চা পানের এক পর্যায়ে হেলাল ঘুমিয়ে পড়েন। পরে ডিস অ্যানটেনার তার গলায় পেঁচিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুদিক থেকে টেনে হেলালকে হত্যা করে। হত্যার পর হেলালের পকেটে থাকা ২৫৩ টাকা, মোবাইল থেকে বিকাশ এবং নগদ অ্যাকাউন্টে থাকা টাকার মধ্য থেকে ৪৩ হাজার টাকা উঠিয়ে নেন। রাতে শপিং ব্যাগে করে খন্ডিত মাথাটি রেখে দেন ভূঁইয়া কবরস্থান-সংলগ্ন ডোবার ডাস্টবিনের মধ্যে। সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে ডিবি পুলিশ গত ১৮ জুন রূপমের স্ত্রী মনি সরকার এবং শাশুড়ি রাশিদা আক্তারকে আটক করে। হত্যার পরে লুট করা টাকার কিছু অংশ নিয়ে রূপম ঢাকা ও বগুড়ায় আত্মগোপন করে বরিশালে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। গত ২১ জুন রাতে রাজধানীর গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন