- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

বেড়েছে সবজি-চাল ও মুরগির দাম

রাজধানীর বাজারে কয়েক সপ্তাহ ধরেই আলু ছাড়া প্রায় সব সবজির দামই এখন চড়া। এরমধ্যে মুরগির দাম আরও বেড়েছে। চালের বাজারও যথারীতি চড়া। তবে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিত্যপণ্যের বাজারে দফায় দফায় দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুধু সবজিই নয়, নিত্যপণ্যের বাজারে অনেক পণ্যের দামই এখন চড়া। বিশেষত বাজারে মাছ, শাক, ডাল, আটা, ময়দা ও চা পাতার দাম বেড়েছে শেষ দুই সপ্তাহে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০-২০ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ১৮০-২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৭০-১৮০ টাকা।

অন্যদিকে, গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০-৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পশুর সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় দাম বাড়েনি।

গত এক সপ্তাহে সামুদ্রিক ও খাল-নদীর বেশ কয়েকটি মাছের দাম কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। সুপারশপগুলোতেও চড়া দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, আজকের বাজারে কোরাল বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়, আইড় ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) আকারভেদে ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট চিংড়ির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা।

এ ছাড়া, খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট আকারের পাবদা ৪০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৫০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০-২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০-২৮০ টাকা, কৈ ২০০-২২০ টাকা এবং পাঙাস ও সিলভার কার্প ২৫০–২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের চাষের রুই প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

হাজিপাড়া বউ বাজারে মুরগি বিক্রেতা আবু সাইদ আহমেদ বলেন, সবজি-মাছসহ অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বেশি। যে কারণে দামও সামান্য বেড়েছে। তবে ২০০ টাকা পযন্ত মুরগির দাম স্বাভাবিক বলা যায়।

এদিকে, বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম এলাকাভেদে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির ডিম (লাল) যেখানে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতো, তা এখন ১৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। যদিও কিছু খুচরা দোকানে এখনো এক হালি ডিম ৫০ টাকা রাখা হচ্ছে।

তবে অধিকাংশ বিক্রেতারা বলেছেন, সরবরাহ বাড়ার কারণে ডিমের দাম কমতে শুরু করেছে। যা গত সপ্তাহের চেয়ে ডজনে ৫-১০ টাকা কম।

সবজির দামে অস্থিরতা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ভোক্তা ও বিক্রেতারা। আলু, পেঁপে ছাড়াও ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া কষ্টকর। বাজারে নতুন গোলাকৃতির বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৪০ টাকা কেজি দরে। বরবটি, করলা, চিচিঙ্গা, কচুর লতি বাজারভেদে দাম ১০০-১২০ টাকা পর্যন্ত। এক কেজি ধুন্দল কিনতে হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। ঝিঙ্গা, পটল, ঢ্যাঁড়সও ৮০ টাকার আশেপাশে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজারে এখনো সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে আলু দাম। এই নিত্যপণ্যটি ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ঢাকার বাজারগুলোতে। এ ছাড়া বাজারে কম দামের সবজির মধ্যে রয়েছে শুধু পেঁপে। প্রতি কেজি পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শাকের দামও বেশি এখন বাজারে। লাল শাক, কলমি বা হেলেঞ্চা শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, পুঁইশাক কিনতে চাইলে প্রতি আঁটিতে ৪০-৫০ টাকা খরচ পড়ছে ভোক্তার।

খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য সবজির দামও কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। বাজারে বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার আশপাশে।

বাজারে চালের দাম এখনো বাড়তি। অবশ্য গত দুই সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক-দুই টাকা কমেছে। বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চালের দাম এখন ৭৫-৯৫ টাকা। ব্রি-২৮ চাল ৬২ টাকা ও মোটা ধরনের স্বর্ণা চাল ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।