৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস । জীববৈচিত্র রক্ষার মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হচ্ছে এবারের পরিবেশ দিবস। বাংলাদেশে জীববৈচিত্রের অমূল্য আধার সুন্দরবন। এই সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। । ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়। পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। পরিবেশ দূষিত হয়ে গেলে ধ্বংস হবে সমগ্র সভ্যতা।

প্রতিবছরের মতো এবারো ময়ূরপঙ্খী শিশু-কিশোর সমাজকল্যাণ সংস্থা (গভঃ রেজিঃ নং: ঢ-০৯৫৮৭) এর গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই এই প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে “দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি” কার্যক্রমের যাত্রা এবং ময়ূরপঙ্খী ছাদকৃষি ও গ্রীন গার্ডেনের উদ্বোধন করা হয় । করোনাালিন পরিস্থিতির এই সময়ে রাজধানী মিরপুরে ময়ূরপঙ্খী কার্যালয় ভবনের ছাদে এই কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন ময়ূরপঙ্খীর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রুহিত সুমন ।

ঢাকা মহানগরের প্রত্যেকটি বাড়ির ছাদে এই ছাদকৃষি ও গ্রীন গার্ডেন যাতে করা যায় সে ব্যাপারে কাজ করবে সংস্থাটি । এছাড়া সারাদেশে ময়ূরপঙ্খীর সংস্থার সদস্য ও ভলান্টিয়ারবৃন্দ খালি জায়গায় ব্যাপক হারে গাছ লাগানোর কাজটি নিয়মিত করে যাবে ।

মূলত ১৯৬৮ সালের ২০ মে জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিষদের কাছে একটি চিঠি পাঠায় সুইডেন সরকার। চিঠির বিষয়বস্তু ছিল প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা। সে বছরই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সাধারণ অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। পরের বছর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সমাধানের উপায় খুঁজতে সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সম্মতিতে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ১৯৭২ সালের ৫ থেকে ১৬ জুন জাতিসংঘ মানব পরিবেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনটি ইতিহাসের প্রথম পরিবেশ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের স্বীকৃতি পায়। ১৯৭৩ সালে সম্মেলনের প্রথম দিন ৫ জুনকে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।

রুহিত সুমন বলেন, প্রযুক্তি এসে যেমন আমাদের জীবন যাপনকে সহজ করেছে, তেমনই ক্ষতিকর প্রভাব পরেছে পরিবেশের ওপরে। পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের ওপরেই বর্তায়। একটু চেষ্টা করলেই আমরা পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারি ।

আমরা যেভাবে পরিবেশ রক্ষা করতে পারি:

* গাছ পরিবেশে অক্সিজেন জোগানো ছাড়াও আরও নানাভাবে পরিবেশ রক্ষা করে। তাই পরিবেশ বাঁচাতে আমাদের সবার গাছ লাগানো প্রয়োজন। এছাড়া গাছ বাঁচলে বন্যপ্রাণীও বাঁচবে। তাই পরিবেশের জন্য গাছ লাগানো খুব প্রয়োজনীয়।

* পানির অপর নাম জীবন । পানি যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে আমাদের সবার দৃষ্টি দেয়া একান্ত জরুরি। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে পানি সঞ্চয় করা সম্ভব। ভূগর্ভস্থ পানি কমে আসছে। তাই আমাদের পানি অপচয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

* পরিবেশে প্লাস্টিকের প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই একবার মাত্র ব্যবহার করা যায় এরকম প্লাস্টিকের ব্যবহার আমাদের সবাইকে বর্জন করতে হবে। প্লাস্টিকের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভূগর্ভস্থ জল। এমনকি মৃত্যু হচ্ছে নানা ধরনের সামুদ্রিক প্রাণীরও।

* বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ‍ উ্যপন্ন হয় কয়লা পুড়িয়ে। এর ফলে প্রচুর পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত হয়। গ্রিন হাউস গ্যাস, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রাস অক্সাইড পরিবেশে দূষণ ঘটায়। তাই সোলার পাওয়ার এবং উইন্ড পাওয়ারের মতো শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

* রাস্তায় যত বেশি সংখ্যাক গাড়ি বেরোবে, তত দূষণ বাড়বে। সেই কারণে লকডাউনে পরিবেশ স্বচ্ছ থাকায় বহু দূর থেকেও হিমালয় দেখা গেছে । লকডাউন উঠলেও চেষ্টা করুণ ব্যক্তিগত গাড়ির বদলে গণপরিবহণ ব্যবহার করতে। গণপরিবহণ ব্যবহার করলে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কমবে।