- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

বান্দরবানের উৎসবের আমেজে জুম ধান কাটা শুরু

জুমের পাকা ধান কাটার উৎসব বান্দরবানের পাহাড়ে পাহাড়ে চলছে । জেলার সাতটি উপজেলায় বিশেষ করে দুর্গম পাহাড়গুলোতে চলতি মৌসুমে রোপিত জুমের পাহাড়ে পাহাড়ে ধান পেকেছে এবং খাবার উপযোগী হয়ে পড়েছে মারফাসহ হরেক রকম কৃষিপণ্য।

এসব কৃষিপণ্য জুম ক্ষেত থেকে আহরণ করে ক্ষেত-খামার এবং ঘরে তুলতে শুরু করেছেন জুমচাষিরা। এবারে জেলায় ৯ হাজার ২০ হেক্টর (পাহাড়ে চাষাবাদ) জুমচাষিরা আবাদ করে। ইতিমধ্যে চাষিরা জুম থেকে পাকা ধানসহ রকমারি ফসল কাটতে শুরু করেছে। জেলা শহর থেকে ওয়াইজংশন এবং চিম্বুক এলাকার পাহাড়ে পাহাড়ে দেখা গেছে পাকাধান কাটতে নারী-পুরুষ জুমচাষিদের।

এ দৃশ্যটি পুরো পার্বত্য জেলার এ সময়ের চিত্রও বটে। একাধিক জুমচাষি জানান, এবারে জুমক্ষেতে ফলন ভাল হয়েছে,কারণ চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো এবং উৎপাদন পরিবেশ ভালোই ছিল। চিম্বুক এলাকার একাধিক জুমচাষি জানান, তাদের জুমে এবার ভালো ফসল হয়েছে। ধানের পাশাপাশি ছোটমরিচ,মারফা,মিষ্টি কুমরা,কুমড়া,তিল ও আদার ফলনও ভাল হয়েছে। তবে তিল ও আদা সংগ্রহ করা যাবে আরও কয়েক মাস পর। জেলার সদর, লামা, রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকায় এলাকায় পাহাড়গুলোতে একইভাবে জুমচাষ হয়েছে। এসব জুমেও ভালো ফলন হয়েছে ধানসহ রকমারী কৃষিপণ্যের।

এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ তথ্য মতে, পাহাড়ি বেশির ভাগ মানুষ জুম চাষ নির্ভর। আবাদী জমিতে ফলন কম হলে খাদ্য ঘাটতি দেয়। প্রতিবছর জুম চাষ করে তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নসহ আর্থিক স্বচ্ছলতা আসে এবং সারা বছরের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। বান্দরবানের মারমা, বম, ত্রিপুরাসহ ১১টি জুমিয়া সম্প্রদায়ের আয়ের প্রধান উৎস জুমচাষ। তারা এক মৌসুমের জুমের উৎপাদিত ফসল দিয়ে সারা বছরের পরিবারের খাদ্য যোগান দেন। ওই সম্প্রদায়গুলো যুগযুগ ধরে এভাবে জীবন যাপন করেন আসছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড.একেএম নাজমুল হক জানান, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের অন্যতম আয়ের প্রধান উৎস জুম চাষ। পাহাড়িদের খাদ্য চাহিদা পূরণ হয় এই জুম চাষের মাধ্যমে। তাই জুম চাষে পাহাড়িদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয় কৃষি বিভাগ থেকে। এই কৃষিবিদ আরও জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় নয় হাজার ২০ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে জুম চাষ হয়েছে।