- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

বর্ণবাদ নির্মূলে ইসলাম

একবার বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু যর গিফারী (রা.) তর্কের সময় বিলাল (রা.) কে ‘কালো মায়ের সন্তান’ বলে গালমন্দ করলে রাসুল (সা.) এতে বিরক্ত হন। তিনি আবু যর (রা.) কে বলেন, ‘তুমি এমন ব্যক্তি, যার মধ্যে এখনো জাহেলিয়াতের চিহ্ন রয়েছে’। রাসুল (সা.) এখানে হযরত আবু যর গিফারী (রা.) এর বক্তব্যকে ‘জাহিলিয়াতে’র সাথে তুলনা করেছেন। আমাদের সময়.কম।

যখন পুরো পৃথিবী খোদায়ী নির্দেশনার অভাবে মূর্খতা ও বর্বরতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। মুহাম্মদ (সা.) এর বর্ণবাদ ও জাতিবিদ্বেষ বিরোধী শিক্ষা পরবর্তীতে আরবদের এধরনের কুসংস্কারমূলক মনোভাবের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে ন্যায় ও সাম্যের পথে চলতে নির্দেশনা প্রদান করে।

ইসলামে বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই। ইসলাম বর্ণবাদকে নির্মূল করে আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠা করে এর উদাহরণ বিশ্ববাসীর সামনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আর এ কারণে হাবশার হজরত বিলাল (রা.) ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

হযরত বিলাল (রা.) ছিলেন একজন কৃষ্ণাঙ্গ কৃতদাস। যিনি পরবর্তীতে হযরত আবু বকর (রা.) এর হাতে দাসত্ব থেকে মুক্ত হন এবং মদীনায় মসজিদে নববীতে মুহাম্মদ (সা.) তাকে নামাজের আযান দেওয়ার জন্য মুয়াজ্জিন হিসেবে নিযুক্ত করেন।

কোরআনে কারিমের অসংখ্য আয়াতে এবং হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) অনেক হাদিসে বর্ণবাদিতাকে নিষেধ করেছেন। এমনকি তিনি বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, হে লোক সকল, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে অধিকতর সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী, যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া অবলম্বন করে। সব বিষয়ে আল্লাহর কথা অধিক খেয়াল রাখে। ধর্ম বিশ্বাস, গাত্রবর্ণ, শক্তি ও বংশের অহংকারবশত কোনো ব্যক্তি বা জাতি কর্তৃক নিজেদের শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করাকে ইসলাম প্রত্যাখ্যান করে।

বর্তমান বিশ্বে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে বর্ণবাদ ও সাম্প্র্রদায়িকতা। বৈষম্য ও বর্ণবাদ দূরীকরণের ব্যাপারে জোর প্রচেষ্টা চালানো সত্ত্বেও বিশ্ব থেকে এখনো বৈষম্য ও বর্ণবাদের অবসান হয়নি। এমনকি এই বর্ণবাদের কারণেই বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষকে প্রাণ হারাতে হচ্ছে।

সাম্প্রদায়িকতা ও বর্ণবাদকে ইসলাম সমর্থন দেয় না। কোরআন কঠোরভাবে মানুষের মধ্যকার সমতাকে নিশ্চিত করেছে। ইরশাদ হচ্ছে, হে মানবসকল, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের একজন নারী ও একজন পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি এবং বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হও। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালার কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত, যে সর্বাধিক পরহেজগার। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা সর্বজ্ঞ ও সবকিছুর খবর রাখেন। সুরা হুজরাত:

অতএব বৈষম্য ও বর্ণবাদ থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

বাংলাদেশের সময়/এবি