বাংলাদেশে সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, দুই দেশের নিবিড় সম্পর্ক থাকার পরও সীমান্তে বাংলাদেশের লোকজনকে হত্যার বিষয়টি দুঃখজনক।

বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ভারতের অভ্যন্তরে ঘটে থাকে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা একমত হয়েছি যে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডই দুঃখজনক। কিন্তু আমরা নিজেদের প্রশ্ন করেছি, সমস্যার মূল কারণ কী এবং এটি হচ্ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। আমাদের দুই পক্ষের অভীষ্ট লক্ষ্য হওয়া উচিত অপরাধবিহীন সীমান্ত, যাতে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড না হয়। আমার ধারণা, আমরা দুই পক্ষ এই সমস্যার সমাধান করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে নিশ্চয়তা দিতে চাই যেকোনো পরিস্থিতিতে ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে। আর এ দুদেশের মধ্যে উন্নয়নকে কেন্দ্র করে অনেক সম্ভাবনা আছে। সেটা খুঁজে বের করতেই এ সফরে আসা।

বাংলাদেশে সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, এ দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ আমাদের দেশের জন্যও অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ আমাদের কাছে শুধু একজন প্রতিনিধি না বরং সারাবিশ্বের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার। আমাদের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আমরা শুধু আলোচনার মাধ্যমেই যেকোনো সংকটের সমাধান করতে পারি।

এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে নিরাপত্তা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বাণিজ্য, পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এস জয়শঙ্কর উন্নয়নশীল দেশের স্ট্যাটাস পাওয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্পূর্ণ নিজের কাজ ও যোগ্যতায় এটি অর্জন করেছে।

তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে ভারত সরকার যে আশ্বাস দিয়েছিল সেই অবস্থানের পরিবর্তন হবে না বলেও জানান তিনি।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে দিল্লি থেকে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বিএএফ বাশার ঘাঁটিতে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে এস জয়শঙ্করের এ সফর।

বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এস জয়শঙ্কর। রাতেই দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন তিনি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২৫ অথবা ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা আসছেন। ২৭ মার্চ তার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে।