- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

পুলিশের লাথিতে মৃত্যু, অভিযোগ টাকা দিয়ে মীমাংসার

গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় পুলিশের লাথির আঘাতে এক কৃষকের মৃত্যুর ঘটনাটি পাঁচ লাখ টাকায় মীমাংসা করানোর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এই মীমাংসার সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলার সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান, মেয়রসহ আওয়ামী লীগের নেতারা।

উল্লেখ্য, পুলিশের উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) শামীম হাসানের লাথির আঘাতে মেরুদন্ড ভেঙে কৃষক নিখিল তালুকদার (৩২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মীমাংসার ব্যাপারে নিখিলের ভাই শংকর তালুকদার বলেন, ‘আমাদের হাতে দুই লাখ টাকা দিয়েছে। বাকি তিন লাখ আগামী পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যে দেবে এবং আমাকে ও বৌদিকে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছেন নেতারা।’ এ বিষয়ে কোটালিপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান বলেন, ‘নিখিলের মৃত্যুর ব্যাপারে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে কোটালীপাড়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপজেলা কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বসেছিলেন। সেখানে আমিও ছিলাম। প্রথমে সেখানে নিখিলের স্মরণে শোকসভা হয়। নিখিলের মৃত্যুর ব্যাপারে যে অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে পুলিশের বিভাগীয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে মীমাংসা এটা পুলিশের পক্ষ থেকে হয়নি। সভায় যে নেতারা ছিলেন তারা নিখিলের অবর্তমানে পরিবার চালানোর জন্য ব্যবস্থা করেছেন।’ রামশীল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোকন বালা বলেন, ‘সভায় সিদ্ধান্ত হয় নিহত নিখিলের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা এবং তার স্ত্রী ও ছোট ভাইকে চাকরি দেওয়া হবে।’ কোটালিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল বিশ্বাস জানান, নিখিল যেহেতু উপার্জন করত, তাই পরিবারটিকে রক্ষার জন্য আমিসহ কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক কমিটির নেতারা বসেছিলাম।

সেখানে উপস্থিত সবাই নিখিলের পরিবারটিকে বাঁচানোর জন্য পাঁচ লাখ টাকা ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত আসলাম খান বলেন, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার সঠিক তদন্ত হবে। মীমাংসার বিষয়টি আমার নয়। আমার কাজ সঠিক তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়া। এরই মধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করেছি। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়া হবে। তবে অভিযুক্ত শামীম যদি দোষী হয় তাহলে তাকে শাস্তি পেতে হবে।’ প্রসঙ্গত, গত ২ জুন বিকালে তাস খেলাকে কেন্দ্র করে ওই পুলিশ সদস্য নিখিলকে হাঁটু দিয়ে লাথি মারেন। এতে গুরুতর আহত হন নিখিল। এরপর প্রথমে বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেল এবং পরে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন