- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

পাহাড়ে বাহারি ফল

পার্বত্যাঞ্চলে এ বছর মৌসুমি ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাহারি ফলের ম ম গন্ধ সুবাস ছড়াচ্ছে পাহাড়ি জনপদে। নানা ধরনের এসব রসালো মিশ্র ফলে সয়লাব হয়েছে বাজার। প্রতিদিন বসছে মৌসুমি ফলের হাট। এসব ফলের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ও উন্নত জাতের কাঁঠাল, আনারস, লিচু ও আম। রাঙামাটির বিভিন্ন হাট-বাজারে এখন চোখজুড়ানো মৌসুমি ফলের সমারোহ। তাই চাহিদা অনেক, দামও কম। ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে মিলছে যে কোনো ফল। রাঙামাটি জেলা কৃষি তথ্য সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে উপযুক্ত আবহাওয়ার কারণে রাঙামাটিতে আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচুর প্রচুর ফলন হয়েছে। এর মধ্যে রাঙামাটি জেলা সদর, নানিয়ারচর, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী, বরকল, জুরাছড়ি, লংগদু, বাঘাইছড়ি, রাজস্থলী উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় এসব মিশ্র ফলের বাগান রয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান মতে, রাঙামাটি জেলায় আমের বাগান রয়েছে ৩ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে। এসব বাগানে এবার ৫৫ হাজার মেট্রিক টন আমের উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে রেগুয়াই ও আম্রপালির হয়েছে বাম্পার ফলন। এ ছাড়া পাহাড়ে ফলন ভালো হওয়ায় দেশি জাতের পরিবর্তে এখন অধিক চাষাবাদ হচ্ছে চায়না-২, চায়না-৩ জাতের লিচুর। বোম্বে লিচুর ফলনও হচ্ছে অনেক বেশি। শুধু রাঙামাটি জেলায় লিচুর বাগান রয়েছে ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর লিচুর উৎপাদন হয়েছে ১৭ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন। একই সঙ্গে আনারস আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। এর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯.২ মেট্রিক টন। আর কাঁঠাল আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৮৬৩ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন। রাঙামাটির স্থানীয় মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী জ্ঞানান্দু চাকমা জানান, দেশে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মৌসুমি ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। চাহিদা থাকলেও এসব ফলের দাম এবার একটু কম। আনারসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইতিমধ্যে বাজারে এসেছে আম, কাঁঠাল, লিচু। পার্বত্যাঞ্চলে এসব মৌসুমি ফল উৎপাদন হচ্ছে প্রচুর। এ ছাড়া উৎপাদিত মৌসুমি ফলে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। কিন্তু হিমাগার না থাকায় সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। রাঙামাটি থেকে ফল নিয়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ ট্রাক বাইরের জেলাগুলোতে যাচ্ছে। এসব ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাঙামাটিতে বিভিন্ন মৌসুমি ফলের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। ফলনও হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। বিশেষ করে উন্নত চাষাবাদের কারণে পাহাড়ে সব মৌসুমে বিভিন্ন মৌসুমি ফল পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য পাহাড়কে এখন ‘মৌসুমি ফলের দেশ’ বলা হচ্ছে। কৃষকরা যদি আরও একটু সচেতন হন তাহলে ফল উৎপাদনের ধারা ধরে রাখা সম্ভব হবে। তবে এ সম্ভাবনাময় কৃষি খাতকে উন্নয়নশীল করতে পার্বত্যাঞ্চলে মৌসুমি ফল সংরক্ষণ ও কৃষকদের স্বার্থে হিমাগার স্থাপন খুবই প্রয়োজন।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন