- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

নৌকার প্রার্থীর বিপুল ভোটে জয়

যশোর-৬ কেশবপুর আসনের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে মঙ্গলবার এই আসনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে ভোট গণনা শেষে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত ফলাফলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহীন চাকলাদার ১ লাখ ২৪ হাজার ৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ১২ ভোট। তবে বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন বর্জন করায় মাঠে ছিলেন না আবুল হোসেন আজাদ। অপর প্রার্থী জাতীয় পার্টির হাবিবুর রহমান লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৬৭৮।

কেশবপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার বজলুর রশীদ ভোট গণনা শেষে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর শুরু হয় গণনা।

কেশবপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার বজলুর রশীদ ঘোষিত ফলাফলে জানান, কেশবপুর আসনে মোট ২ লাখ ৩ হাজার ১৮ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এরমধ্যে বাতিল হয়েছে ১ হাজার ৩৭৪ ভোট। আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহীন চাকলাদার নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ৩ ভোট, বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১২ ভোট ও জাতীয় পার্টির হাবিবুর রহমান লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৬৭৮। নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

সকালে ভোটগ্রহণ চলাকালে বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ভোটারদের লম্বা লাইন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে মাস্ক পড়ে ফাঁকা ফাঁকা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন। কেন্দ্রগুলো ঘিরে ছিল উৎসবের আমেজ। পুরো এলাকায় নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা মুখরিত করে রেখেছিলেন।

যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, যশোর-৬ কেশবপুর আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। করোনাকালের মধ্যে ভোটগ্রহণ হওয়ায় ভোটাররা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বতস্ফূর্তভাবে ভোটপ্রদান করেছেন।

ভোটগ্রহণ চলাকালে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে স্বাস্থবিধি মেনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি তার নিজ উদ্যোগেও প্রতিটি কেন্দ্র স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী রাখা হয়েছে।

যশোর জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভোটগ্রহণ অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত ছিল। নির্বাচনী এলাকায় ২ জন জুডিশিয়াল ও ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন। ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ছিল। এছাড়াও ১৮টি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের ৬টি টিম নির্বাচনের মাঠে সার্বক্ষণিক টহল দিয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি সদস্যদের নিয়োজিত রাখা হয়। নির্বাচন কমিশন ভোটারদের জন্য অবশ্য প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যানারসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, টিস্যু পেপারের ব্যবস্থা রাখে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি এমপি ও সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য হয়। এরপর বিজ্ঞপ্তি জারি করে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২৯ মার্চ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত থাকলেও তার এক সপ্তাহ আগে করোনার কারণে ২২ মার্চ ওই নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।

তফসিল অনুযায়ী ২৭ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, বিএনপির আবুল হোসেন আজাদ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এরমধ্যে বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫ জুলাই ভোট বর্জন করেন।