- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ইউনাইটেড হাসপাতাল শীর্ষ কর্মকর্তাদের

রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকান্ডে পাঁচ রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালটির শীর্ষ চার কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশ। পুড়ে মারা যাওয়া এক রোগীর স্বজনের দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ২৭ মে রাতে আগুনে পুড়ে যায় ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনাভাইরাস ইউনিট। এ ঘটনায় সেখানে চিকিৎসাধীন পাঁচজন রোগীর নির্মম মৃত্যু হয়। পুড়ে মারা যাওয়া এক রোগীর স্বজন ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান, এমডি, সিইও, পরিচালক, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক-নার্স ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ কাজের কারণে রোগীদের মৃত্যুর অভিযোগ এনে গুলশান থানায় মামলা করেন। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অপরাধী যে-ই হোক তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। প্রভাবশালী বলে কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। আসামির সবার ব্যাপারেই দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। কেউ কোথাও যেতে পারবেন না।

তিনি বলেন, এই চার কর্মকর্তা হলেন ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. হাসান মাহমুদ রাজা, এমডি মো. ফরিদুর রহমান খান, সিইও মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান ও পরিচালক ডা. আবু সাঈদ এম এম রহমান। তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে পুলিশের গুলশান জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী উপকমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগকারী তো অনেকের পদ উল্লেখ করেছেন, কিন্তু সবাই তো আর অপরাধী নয়। তদন্ত করে আরও নিশ্চিত হতে হবে যে, ওই ঘটনার জন্য আসলে কে দায়ী।’ নিহত ভারনন অ্যান্থনির জামাতা রোনাল্ড মিকি গমেজ ৩ জুন গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার দুই সপ্তাহ পরও পুলিশ কোনো অগ্রগতির খবর না দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন রোনাল্ড মিকি গমেজ। তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবে আমরা সবাই ভেঙে পড়েছি। আমার চোখের সামনেই সব ঘটনা ঘটল। ইউনিটের এসিতে প্রথমে সামান্য আগুন লাগলে সবাইকে বললাম অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আনতে। কিন্তু ওয়ার্ডবয় বলল, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নাই। সে দৌড়ে গিয়ে আনল মেঝে মোছার মপ, যা দিয়ে চেষ্টা করতে গিয়ে আগুন আরও বেড়ে গেল।’ তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঝুঁকিপূর্ণ ও নিম্নমানের তাঁবু ব্যবহারের ফলে আগুন লাগার মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে করোনা ইউনিট ভস্মীভূত হয় বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও নিম্নমানের তাঁবু ব্যবহারের ফলে আগুন লাগার মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে করোনা ইউনিট ভস্মীভূত হয়। প্রসঙ্গত, করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতাল ভবনের সামনে তাঁবু টাঙিয়ে অস্থায়ী একটি ইউনিট করেছিল ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ। ২৭ মে রাত পৌনে ১০টার দিকে ওই আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লেগে ভারনন অ্যান্থনি (৭৪), মো. মাহবুব (৫০), মো. মনির হোসেন (৭৫), খোদেজা বেগম (৭০) ও রিয়াজ উল আলম (৪৫) নামে পাঁচজন মারা যান। এদের মধ্যে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন