- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

দুর্নীতি করে বড়লোক হতে চাইলে চাকরি ছাড়ুন

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, দুর্নীতি করে বড়লোক হতে চাইলে পুলিশের চাকরি ছাড়ুন। ব্যবসা করে বড়লোক হোন আমরা সাধুবাদ জানাব। কিন্তু পুলিশে থেকে কোনোভাবেই দুর্নীতি করা যাবে না। সারা দেশের পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আইজিপি আরও বলেন, পুলিশি সহায়তা পেতে জনগণকে এখন পুলিশের কাছে আসতে হয়। আমরা এমন একটি ব্যবস্থা চালু করতে চাই, যাতে জনগণকে পুলিশের কাছে আসতে না হয়। পুলিশই জনগণের কাছে সেবা নিয়ে যাবে। আর এজন্য বর্তমান প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। গত রবিবার সন্ধ্যায় আইজিপি বেনজীর আহমেদ পুলিশ সদর দফতর থেকে সিএমপি, কেএমপি, আরএমপি, বিএমপি, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল রেঞ্জ, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, সিআইডি, র‌্যাব পিবিআই, রেলওয়ে, ট্যুরিস্ট, হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ এবং পুলিশ স্টাফ কলেজ, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সারদার প্রধান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভিডিও কনফারেন্সে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে ইউনিটপ্রধানদের নির্দেশনা দিয়ে আইজিপি বলেন, আমাদের দেশের প্রতিটি ইউনিয়নকে একেকটি বিটে ভাগ করতে হবে। প্রতিটি বিটের দায়িত্বে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়োজিত করা হবে। তিনি নিয়মিত ওই ইউনিয়নের মানুষের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা ইত্যাদির খোঁজখবর রাখবেন। আমরা সারা দেশে বিট পুলিশিং চালু করে মানুষের কাছে যেতে চাই, মানুষের হৃদয় জয় করতে চাই। বেনজীর আহমেদ বলেন, করোনার সময় জনগণকে আমাদের কাছে আসতে হয়নি। আমরা জনগণের কাছে গিয়েছি, তাদের পাশে থেকেছি। এসব আমাদের দায়িত্ব ছিল না, কিন্তু আমরা মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজটি করেছি। এসব করতে গিয়ে নিজেরা আক্রান্ত হয়েছি। জীবন বিলিয়ে দিয়েছি। বাংলাদেশ প্রতিদিন

আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ অনবদ্য ভূমিকার জন্য আমাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশবাসী আমাদের প্রশংসা করছেন। দেশের জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিরা আমাদের পক্ষে কলম ধরেছেন।

পুলিশপ্রধান বলেন, জনগণের পুলিশ হতে হলে পুলিশকে মাদকমুক্ত হতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য মাদক খাবে না, মাদকের ব্যবসা করবে না, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না। পুলিশকে সব ধরনের নির্যাতন থেকে বেরিয়ে এসে জনগণের পুলিশ হতে হবে।
আইজিপি বলেন, মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে পুলিশ কর্মকর্তা ও ফোর্সেরও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা হবে। বর্তমানে কোনো পুলিশ সদস্য চাকরিরত অবস্থায় নিহত হলে অথবা কঠিন রোগে আক্রান্ত হলে তাকে ও তার পরিবারকে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়। আমরা চাকরিরত অবস্থায় পুলিশ কর্মকর্তা ও ফোর্সের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে চাই। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই, যাতে তারা নির্বিঘ্নে জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে পারেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর আধুনিক সমরাস্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা শুধু থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করেছি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকেও উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হিসেবে তৈরি হতে হবে।

আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে গিয়ে আত্মদানকারী পুলিশ সদস্যদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।