- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

‘তোর জন্যই আজ আমার এই অবস্থা’

জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার নামে মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করে সরবরাহের দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই প্রথমবারের মতো মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে স্বামী-স্ত্রীকে মুখোমুখি করা হলে ডা. সাবরিনা আরিফকে দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন।

এসময় আরিফকে উদ্দেশ করে সাবরিনা বলেন- তোর জন্যই আজ আমার এই অবস্থা। তুই আমাকে শেষ করে দিয়েছিস। সবকিছু করে এখন আমাকে ফাঁসিয়েছিস। আরিফও পাল্টা জবাবে বলেন, সব দোষ কি আমার? তুমি তো এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলে। তুমিও জানতে সবকিছু।

সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সাবরিনা দাবি করেন, জেকেজি ও ওভাল গ্রুপের অনেকেই এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। আরিফ চৌধুরীর এই কর্মকাণ্ড এবং ব্যক্তিগত হয়রানির কারণে তিনি তাকে ডিভোর্সও দিয়েছেন। তবে আরিফ বলেছেন, সাবরিনার কারণে এই অপকর্মে জড়িয়েছেন তিনি।

ডিবি জানায়, উভয়েই জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে এজন্য তারা একে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়েছেন।

গোয়েন্দা পুলিশ আরো জানায়, জেকেজি যে করোনাভাইরাস পরীক্ষার নামে জালিয়াতি করতো তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন আমরা আরিফ বা সাবরিনা কার কতটুকু ভূমিকা ছিল তা নিরূপণ করার চেষ্টা করছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে সব কিছু জানা যাবে।

বুধবার জেকেজির সিইও আরিফ চৌধুরীকে দ্বিতীয় দফায় আরো চারদিনের রিমান্ডে আনা হয়। এর আগে গত সোমবার ডা. সাবরিনাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল ডিবি পুলিশ। ডা. সাবরিনার বৃহস্পতিবার রিমান্ড শেষ হওয়ার কথা। শুক্রবার তাকে আবারো দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, আরিফ ও সাবরিনা করোনাকে কেন্দ্র করে তাদের জেকেজি হেলথ কেয়ারের ভুয়া রিপোর্টের কথা স্বীকার করেছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সেটা বলেননি। কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে সেটি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রথম দফা রিমান্ডে শিকার না করলে প্রয়োজনে সাবরিনাকে আবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পুলিশ জানায়, জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার রোগীকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০টি প্রতিবেদন তৈরি করা হয় জেকেজি কর্মীদের ল্যাপটপে। যার মাধ্যমে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও প্রতিটি পরীক্ষার জন্য নেয়া হতো সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা। আর প্রবাসী নাগরিকদের কাছ থেকে নেয়া হতো ১০০ ডলার।