- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় তদন্ত চলছে তিনভাবে

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্মম পিটুনিতে তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের অবহেলা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে সমাজসেবা অধিদফতর গঠিত তদন্ত কমিটি। অন্যদিকে এ ঘটনায় গ্রেফতার ওই কেন্দ্রের পাঁচ কর্মকর্তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। আর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু লাইছকে নিয়ে তিন সদস্যের যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল, সে কমিটিও কাজ শুরু করেছে।

সমাজসেবা অধিদফতর ঢাকার পরিচালক সৈয়দ মো. নূরুল বশিরকে প্রধান করে যে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়, সে কমিটি শনিবার থেকেই কাজ শুরু করে। সৈয়দ মো. নূরুল বশির গতকাল বলেন, তারা ইতিমধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত কিশোরদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অফিস পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট আরও অনেকের সঙ্গে তারা কথা বলেছেন। প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলবেন তারা। এরপর ঢাকায় ফিরে কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের রিপোর্ট জমা দেবেন। এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে ব্যাপারে কিছু সুপারিশও ওই রিপোর্টে থাকবে বলে তিনি জানান। সৈয়দ মো. নূরুল বশির বলেন, তারা মূলত বিভাগীয় তদন্ত করবেন। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তাদের দায়িত্ব পালনে ত্রুটি আছে কি না সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিভাগীয় এ তদন্তের পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন করা হচ্ছে। আর যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের যে তদন্ত কমিটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় করেছে, সে কমিটিও তাদের মতো করে কাজ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা স্পট মার্ডার নয়। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই দুঃখজনক এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে স্থায়ী চিকিৎসক নেই। আহতদের যদি সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া যেত, তাহলে হয়তো মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো যেত। এদিকে এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক রকিবুজ্জামান জানান, আদালত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের পাঁচ কর্মকর্তার রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করার পর শনিবার থেকেই আসামিদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। গতকালও এ জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত ছিল।

বৃহস্পতিবার যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে তিন কিশোরকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আরও ১৫ কিশোর। প্রথম দিকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং বলেন, কেন্দ্রে থাকা কিশোররা দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে মারামারি করায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিন্তু পরে আহত কিশোরদের বক্তব্য ও পুলিশের তদন্তে স্পষ্ট হয় যে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরের কারণেই তিন কিশোর নিহত ও ১৫ কিশোর আহত হয়। পরে নিহত কিশোর রাব্বির বাবা রোকা মিয়া বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অজ্ঞাত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করা হয়। পরে পুলিশ কেন্দ্রের ১৯ কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আনসার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন