- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

চীনে ফের লকডাউন ভারতে এক দিনেই ২০০০ মৃত্যু

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৪ লাখ ৪৮ হাজারে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৮৩ লাখ। এদিকে নতুন করে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় চীনের রাজধানীতে সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে ফের কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়েছে। ভারতের পরিস্থিতিও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। দেশটিতে এবার এক দিনেই মারা গেছেন দুই হাজারের বেশি মানুষ। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, গত মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় ভারতে মারা যান দুই হাজার ৬ জন, ব্রাজিলে ১ হাজার ৩৩৮ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ৮৪৯ জন, মেক্সিকোতে ৪৩৯ জন, যুক্তরাজ্যে ২৩৩ জন, পেরুতে ১৯৬ জন, রাশিয়ায় ১৯৩ জন, পাকিস্তানে ১১০ জন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের বৃহত্তম পাইকারি খাদ্য বাজারে কভিড-১৯ এ আক্রান্ত নতুন একদল মানুষের সন্ধান পাওয়ার পর সেখানে আবার কঠোর লকডাউন আরোপ এবং বাসিন্দাদের বিপুল সংখ্যায় পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, বেইজিংয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিনফাডি পাইকারি খাদ্য বাজারের আশপাশে ১০৬ জনের সংক্রমণের সংবাদের পর বেইজিংয়ে যুদ্ধকালীন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শহরে এক লাখ মহামারী নিয়ন্ত্রণকারী কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে, অন্তত ২৮টি এলাকা সম্পূর্ণ লকডাউনে রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানসহ যেসব প্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল সেগুলো আবার লকডাউনের আওতায় রাখা হয়েছে। যারা বেইজিংয়ের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাস করছেন তাদের রাজধানীর বাইরে যেতে কিংবা কোনোরকম যানবাহনে উঠতে নিষেধ করা হয়েছে। বেইজিংয়ের দুটি বিমানবন্দরে বিমান চলাচল সীমিত হওয়ায় অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল হয়ে গেছে। ট্রেন চলাচল আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ না করা হলেও মানুষজনকে রেলে চড়তে অনুৎসাহিত করছেন কর্মকর্তারা। জানা গেছে, ১০ দিন আগে বেইজিং কর্তৃপক্ষ শহরটির সতর্কতা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রা থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ মাত্রায় নামিয়ে নিয়েছিল। মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ শহরটিতে সতর্কতা ফের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রায় উত্তীর্ণ করার পর অসংখ্য দূরপাল্লার বাস, গাড়ি ও ট্যাক্সি সার্ভিসও বাতিল হয়েছে। রাজধানীর ২৭টি এলাকাকে ‘মধ্যম-ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে; এসব এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে সবার নিবন্ধন ও শরীরের তাপমাত্রা মাপার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভারতে এক দিনে দুই হাজারের বেশি মৃত্যু : করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতে প্রথমবারের মতো এক দিনে দুই হাজারেরও বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় কভিড-১৯ এ দুই হাজার ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণে ভারতে ১১ হাজার ৯০৩ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্র রাজ্যেই কভিড-১৯ এ পাঁচ হাজার ৫৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যটিতে ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৮০৯ জনের মৃত্যু হয়। রাজ্যের প্রধান শহর ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ে মৃত্যুর সংখ্যা তিন হাজার ১৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৪৩৭ জনের মৃত্যু নিয়ে গুজরাটকে ছাড়িয়ে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে রাজধানী দিল্লি। এখানে মোট মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ৮৩৭ জন। গুজরাটে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৫৩৩ জনের। তামিলনাড়ুতে ৫২৮ জনের আর পশ্চিমবঙ্গে ৪৯৫ জনের। দেশটিতে এক দিনে আরও ১০ হাজার ৯৭৮ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ায় করোনাভাইরাস আক্রান্তের মোট সংখ্যা তিন লাখ ৫৪ হাজার ৬৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের এ সংখ্যা নিয়ে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে আছে ভারত। শুধু যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও রাশিয়া ভারতের উপরে আছে।

ব্রাজিলে রোগীর সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়েছে : ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে প্রতিদিন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রাণহানির সংখ্যাকে অতিক্রম করেছে। ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গতকাল জানান, ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে সংক্রমিত লোকের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৯১৮ জন। দেশটিতে মোট সংক্রমিত লোকের সংখ্যা ৯ লাখেরও বেশি। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো এই ভাইরাসের ভয়াবহতাকে অগ্রাহ্য করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দ্রুত খোলার ওপর জোর দিয়েছেন।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন