- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

ক্যানসার চিকিৎসায় আবিষ্কৃত হলো ‘সুপার টি-সেল’

বিশ্বজুড়ে ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন আশার আলো দেখা দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমন এক ধরনের শক্তিশালী টি-সেল শনাক্ত করেছেন, যা একাই বিভিন্ন ধরনের টিউমারের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, টিউমার-ইনফিলট্রেটিং লিম্ফোসাইট থেরাপিতে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন ক্যানসার রোগী সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করেছেন। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চিকিৎসার বছরখানেক পরও তাদের শরীরে শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা বিদ্যমান ছিল।

গবেষকেরা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, এই রোগীদের শরীরে উপস্থিত একটি বিশেষ ধরণের “মাল্টি-প্রংড” টি-সেল সাধারণ টি-সেলের তুলনায় একাধিক ক্যানসার প্রোটিন শনাক্ত ও আক্রমণ করতে পারে। অর্থাৎ, এই এক ধরনের টি-সেলই একাধিক ক্যানসারের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে লড়াই করতে সক্ষম।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বহুমুখী আক্রমণক্ষমতার কারণেই কিছু রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বিপরীতে, যেসব রোগীর ক্যানসার চিকিৎসার পরও অগ্রসর হতে থাকে, তাদের শরীরে এ ধরনের টি-সেল পাওয়া যায়নি।

এই থেরাপিতে রোগীর নিজস্ব টিউমার থেকে ইমিউন সেল সংগ্রহ করা হয়। এরপর ল্যাবে সেগুলোকে বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করে পুনরায় রোগীর শরীরে প্রবেশ করানো হয়। এ প্রক্রিয়া ক্যানসারের শেষ পর্যায়ের রোগীদের জন্য বিশেষ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রেই ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে, বিশেষত মেলানোমা ক্যানসার রোগীদের মধ্যে।

গবেষকেরা এখন চেষ্টা করছেন, এসব ‘মাল্টি-প্রংড’ টি-সেল ল্যাবে তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায় কি না, যেমন বর্তমানে রক্তের ক্যানসারে CAR-T থেরাপি সফলভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই গবেষণা সফলভাবে প্রয়োগ করা গেলে ভবিষ্যতে ক্যানসারের বিরুদ্ধে এক জীবন্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থার যুগান্তকারী দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

গবেষক দলের এক সদস্যের ভাষায়, আমরা হয়তো এমন এক যুগে প্রবেশ করছি, যেখানে শরীরের নিজস্ব কোষই হবে সবচেয়ে শক্তিশালী ক্যানসার প্রতিরোধক অস্ত্র।