ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিমের ছেলে ইরফানকে কাউন্সিলর পদ থেকে আজই বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের ঘটনায় তাকে বরখাস্ত করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে এ কথা জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, আইন অনুসারে প্রথমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে। এরপরে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে।

এদিকে স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে রিপোর্ট (দণ্ডিত হওয়ার বিষয়ে) পেলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এটা তো আইনে কাভার করে। তিনি (ইরফান সেলিম) বরখাস্ত হবেন। আইনে (স্থানীয় সরকার সিটি করপোরেশন আইন) বলা হয়েছে, কেউ সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনি বরখাস্ত হবেন।

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় মামলায় সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার থেকে এমপি হাজী সেলিমের ছেলে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফানের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। ৮তলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে অভিযান চলে। ইরফানের বাসা থেকে বেশ কিছু অবৈধ জিনিস উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ছিল একটি আগ্নেয়াস্ত্র, যেটা অবৈধ। সেটির কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। এছাড়া ৫-৬ লিটার মদ ও ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পাওয়া যায় বেশ কিছু বিয়ারের ক্যান।

অভিযান চালিয়ে হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। পরে ইরফানকে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে এক বছর ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ডাদেশ দেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। আর জাহিদুলকে অবৈধ ওয়াকিটকি বহনের দায়ে ছয় মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

২৫ অক্টোবর রাতে ধানমন্ডিতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও ২৬ অক্টোবর ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওয়াসিফ।

মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন- ইরফান সেলিম, এ বি সিদ্দিক দীপু, জাহিদ, মীজানুর রহমান ও অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনজন।

মামলায় বলা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। এরপরই গাড়ি থেকে কয়েকজন বের হয়ে ওয়াসিমকে কিলঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান।

পরে তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।