- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

এন্ড্রু কিশোর সমাহিত হলেন জন্ম শহরেই

শেষকৃত্য শেষে সমাহিত করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত নন্দিত কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরেরকে। রাজশাহীর স্থানীয় খ্রিষ্টান কবরস্থা‌নে বুধবার (১৫জুলাই) সকাল সা‌ড়ে ১১টায় সমা‌হিত করা হয় তা‌কে।

বুধবার সকালে এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে সরাসরি সিটি চার্চে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৯টার দিকে সেখানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর স্বল্প পরিসরে স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও ভক্তদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ নেয়া হয় নগরীর কালেক্টরেট মাঠের পাশে খ্রিষ্টানদের কবরস্থানে। সেখানে শিল্পীকে তার পছন্দের যায়গায় সমাহিত করা হয়।

দীর্ঘদিন ক্যানসারের সাথে লড়াই করে ৬ জুলাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এন্ড্রু কিশোর। তারপর বরেণ্য এই শিল্পীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করা জন্য পরিবারের সদস্যরা এত দিন ছেলেমেয়ের দেশে ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। বাবা এন্ড্রু কিশোরকে শেষবারের মতো দেখতে গত বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেছেন ছেলে জে এন্ড্রু সপ্তক। আর গতকাল মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে ঢাকা হয়ে রাজশাহী পৌঁছেছেন তার মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা।

প্রয়াত এন্ড্রু কিশোরের বড় বোনের স্বামী ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, সর্বস্তরের মানুষ যেন শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেন, সেজন্য ১১টায় মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিপুল জনসমাগম হতে পারে ভেবে করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।

শরীরে নানা ধরনের জটিলতা নিয়ে এন্ড্রু কিশোর অসুস্থ অবস্থায় গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছিলেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর তাঁর শরীরে নন-হজকিন লিম্ফোমা নামের ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে।

সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক লিম সুন থাইয়ের অধীনে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। কয়েক মাস ধরে সেখানে তার চিকিৎসা চলে। দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল চিকিৎসায় শিল্পীকে সহায়তা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা শুরুর কয়েক মাস তাঁর অবস্থা কিছু ভালো হলেও শেষ দিকে এসে আবার অবনতি হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় না দেখে করোনার এই সংকট সময়ের মধ্যেই গেল মাসের ১১ তারিখ ঢাকায় ফেরেন তিনি।

এরপর ২০ জুন থেকে বোন শিখা বিশ্বাসের সঙ্গে জন্মস্থান রাজশাহীতে থাকতে শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প, হায়রে মানুষ রঙের ফানুস, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, আমার বাবার মুখে, আমার সারা দেহ, আমার বুকের মধ্যেখানে, তুমি আমার জীবন, ভেঙ্গেছে পিঞ্জর, ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও, তুমি মোর জীবনের ভাবনা, আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে, তোমায় দেখলে মনে হয়, কিছু কিছু মানুষের জীবনে কি যাদু করিলার মতো অসংখ্য বাংলা গান উপহার দিয়েছেন তিনি। গান গেয়ে জীবনে মোট আটবার পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার।