আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আর এতেই ঘুম নেই ভারতের। এঘটনার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মোদি সরকার।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার ঘটনা একটি উদ্বেগজনক পদক্ষেপ।
তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ভারত ‘গণতান্ত্রিক অধিকার হ্রাস এবং রাজনৈতিক পরিসর সংকুচিত হওয়া’ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন। আমরা বাংলাদেশে অবিলম্বে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে জোরালো সমর্থন জানাই।
এর আগে, শনিবার (১০ মে) সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ওই দিন রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বৈঠক শেষে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেস-সহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
পরে সোমবার বিকেলের দিকে আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
‘সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর গেজেট প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই গেজেট অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ১৬ নং আইনের ধারা ২০-এর (খ) উপধারা (১)-এর দফা (ঙ)-তে বলা হয়েছে, ‘উক্ত সত্তা কর্তৃক বা উহার পক্ষে বা সমর্থনে যে কোনো প্রেস বিবৃতির প্রকাশনা বা মুদ্রণ কিংবা গণমাধ্যম, অনলাইন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য যে কোন মাধ্যমে যে কোন ধরনের প্রচারণা, অথবা মিছিল, সভা-সমাবেশ বা সংবাদ সম্মেলন আয়োজন বা জনসম্মুখে বক্তৃতা প্রদান নিষিদ্ধ করিবে।’
ফলে নতুন এই আইনের ফলে আওয়ামী লীগের কোনো খবরই আর কোনো গণমাধ্যম প্রকাশ করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের খবর প্রচার করা হলে গণমাধ্যমও শাস্তির আওতায় পড়বে বলে মনে করেন আইনজীবীরা।