- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

আপনার সন্তান কি বুলিংয়ের শিকার?

জীবনে চলার পথে আমাদের অনেক সময় অপ্রত্যাশিত বা আক্রমণাত্মক আচরণের শিকার হতে হয়। অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও অনেকে মনের জোরে সেসব সামলেও নেন। এই আচরণের শিকার শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের ব্যক্তিই হতে পারেন। স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী বা অফিসের সহকর্মীদের মাঝে-মধ্যে এমন আচরণের শিকার হতে দেখা যায়। তবে সমস্যাটা বেশি দেখা যায় শিশুদের বেলায়। শিশুরা এমন আচরণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বুঝে উঠতে পারে না, এমন আচরণের শিকার হলে কী করতে হবে। ফলে তারা সহজেই এক ধরণের নিরাপত্তাহীণতায় আক্রান্ত হয়।

বুলিং আজকের যুগে খুবই পরিচিত একটি শব্দ হয়ে উঠেছে। এর অর্থ- কাউকে মানসিকভাবে আঘাত করার উদ্দেশ্যে বারবার বিভিন্নভাবে হয়রানি বা হেনস্তা করা। মৌখিক বুলিংয়ের শিকার হয়ে শিশুরা মানসিক অবসাদে ভোগে। কোনো কাজ স্বচ্ছন্দ্যে করে না। আর এজন্য শিশুরা নিজেকেই অপরাধী মনে করে, যা পরে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে প্ররোচিত করে। ফলে কেউ কেউ আত্মহননের পথও বেছে নেয়।
মা-বাবার কাছে সবচেয়ে খারাপ অনুভূতি হচ্ছে, যখন তার সন্তান বুলিংয়ের শিকার হয়।

সাধারণত শিশুরা খেলার মাঠে বন্ধুদের ও স্কুলে সহপাঠীর বুলিংয়ের শিকার হয়ে থাকে। এর বাইরে পরিচিতজনও বুলিং করতে পারেন। বুলিং ভীষণ বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা, যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আপনার শিশু যাতে বুলিংয়ের শিকার না হয় বা হলেও কীভাবে তা কাটিয়ে উঠতে সন্তানকে সাহায্য করবেন সে বিষয়ে জেনে রাখা জরুরি। অভিভাবক হিসাবে আপনার করসীয় কী, চলুন জেনে নেই।

সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন: আপনার সন্তানকে ঘরে-বাইরে সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন। দিন শেষে নির্দিষ্ট সময়ে কয়েক মিনিট তার সঙ্গে কথা বলুন। সন্তান মানসিকভাবে কেমন আছে তা বুঝার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে তার বন্ধুদের কে কেমন সে বিষয়ে আলোচনা করবেন। এতে আপনার সন্তান কথা বলতেও উৎসাহিত হবে। আর বন্ধুদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ভালো কাজ নয়, সেটিও বুঝাতে হবে। এতে করে বুলিং যে আসলে খারাপ সে বিষয়ে সন্তান বুঝতে শিখবে।

সন্তানের বন্ধুদের খোঁজ নেওয়া: বাবা-মা ব্যস্ততার কারণে সন্তানদের খোঁজখবর রাখেন না। আর এতেই বিপদের পথ তৈরি হয়। তাই সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তার বন্ধুদের বিষয়ে খোঁজ রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- আপনার সন্তানের বন্ধুদের সঙ্গেও কথা বলেন। এতে বুঝতে পারবেন আপনার সন্তানকে তারা কীভাবে দেখে। আর ভালো বন্ধু কখনো কষ্ট দেয় না, সে বিষয়েও তাদের বুঝাতে হবে।

খেলার সঙ্গী হোন: বর্তমানে বাবা-মা কর্মব্যস্ততার কারণে সন্তানদের সময় দিতে পারেন না। এতে করে সন্তানরাও একাকিত্ব বোধ করেন। আবার মোবাইল ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব তো আছেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শিশুরা বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। এতে করে তারা আরও বেশি হতাশ হয়ে পড়ে। তাই সাইবার বুলিংয়ের শিকার যেন না হয়, সে জন্য মোবাইলে কী করছে, কাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হচ্ছে, সে বিষয়ে খোঁজ রাখুন। আর খেলার সময় সন্তানের সঙ্গী হোন। এতে সন্তানের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।

বুলিংয়ের প্রতিবাদ করতে শেখান: ছোটবেলা থেকেই সন্তানকে ভালো-মন্দ বুঝাতে হবে। অন্যায় আচরণ যে কারো জন্যই কষ্টের, এটি বুঝাতে পারলে আপনার সন্তান ভালো মানুষ হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে কোনো বুলিংয়ের চেষ্টা করলে কান্নাকাটি না করে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রতিবাদ করতে শেখান। আর বুলিং যাতে না করে সে বিষয়ে বন্ধুর বাবা-মা ও শিক্ষককে জানাতে উৎসাহিত করুন