- Bangladesher Shomoy | বাংলাদেশের সময়.কম - https://www.bangladeshershomoy.com -

আক্রান্ত ৯০ লাখ মৃত্যু ৪ লাখ ৬৮ হাজার ছাড়াল

বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাকে (কভিড-১৯) কোনোভাবেই দমানো যাচ্ছে না। এতে করে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু আর আক্রান্তের সংখ্যা। বিশ্বে এখন মৃতের সংখ্যা ৪ লাখ ৬৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ৯০ লাখের কাছাকাছি। প্রতিদিনই গড়ে আক্রান্ত বাড়ছে অন্তত ৪০ থেকে ৮০ হাজার করে, আর মৃত্যু ঘটছে অন্তত ৪ থেকে ৫ হাজার করে।

এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, করোনা এখন আরও বিপজ্জনক ধাপে পৌঁছেছে। সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গের্বেয়াসুস জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, করোনার ‘নতুন ও বিপজ্জনক ধাপে’ রয়েছি আমরা। গত বৃহস্পতিবার এক দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে, যা গত ডিসেম্বরে মহামারী শুরুর পর থেকে সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে।

এদিকে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ শনাক্তের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে প্রাণহানির সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। করোনাভাইরাস ছড়ানোর মূলকেন্দ্র হয়ে ওঠা নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি, যেখানে তাদের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে, সেখানে ২০টি অঙ্গরাজ্যে সংক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। এরপরই রয়েছে ব্রাজিল। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার শনাক্ত হওয়া রোগীদের অর্ধেকের বেশি যুক্তরাষ্ট্রের। এরপর উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় দক্ষিণ এশিয়ার রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ভারতে আক্রান্ত ৪ লাখ ছাড়াল : ভারতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ১৩ হাজাওে পৌঁছেছে। গত শনিবার ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ডসংখ্যক ১৫ হাজার ৯১৫ জন নতুনভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। একই সময়ে ৩০৭ জন মারা গেছেন। দেশে করোনায় এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ২৯০ জন মারা গেছেন। ভারতে প্রথম সংক্রমণ থেকে মোট আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছে ১৪৩ দিন। শূন্য থেকে এক লাখে পৌঁছতে সময় লেগেছিল ১১০ দিন। কিন্তু ১ লাখ থেকে সংক্রমণ ২ লাখে পৌঁছতে সময় লেগেছে মাত্র ১৫ দিন। ওই সংখ্যা ৩ লাখে পৌঁছতে ১০ দিন এবং ৪ লাখে পৌঁছতে মাত্র ৮ দিন সময় লেগেছে। ব্রাজিলে মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল : ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল। গত শনিবার ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৬৮ জনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ৫৮ জনে পৌঁছে। একই সময় ব্রাজিলে নতুন করে আরও ৩১ হাজার ৫৭১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৭০ হাজার ১৩৯ জনে। বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের তালিকায় এখন যুক্তরাষ্ট্রের পরই ব্রাজিলের অবস্থান। ২৬ ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তের পর গত শুক্রবার মোট আক্রান্ত ১০ লাখ ছাড়িয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে আরও অনেক বেশি। ব্যাপক শনাক্ত পরীক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় প্রকৃত সংখ্যা জানা সম্ভব হচ্ছে না। কানাডায় আক্রান্ত লাখ ছাড়াল : দুই আমেরিকা আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে করোনার সংক্রমণ যে আশঙ্কাজনক হারে ছড়াচ্ছে তা শীর্ষ আক্রান্ত দেশের তালিকাতেই স্পষ্ট। তবে অন্য দেশগুলোর চেয়ে কানাডায় সংক্রমণ কিছুটা কম হলে তা অব্যাহত আছে। সবশেষ শনাক্ত রোগীতে লাখ পেরোনো দেশের তালিকায় উঠল কানাডার নাম। দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিসির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, কানাডায় প্রথম কোনো কভিড-১৯ পজিটিভ রোগী মারা যায় ৯ মার্চে। আর ২৮ এপ্রিল দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়ায়। আর আজ ২০ জুন দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ২২০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৮ হাজার ৩০০ জন মারা গেছে। তবে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন ৬২ হাজারের বেশি মানুষ। কানাডায় প্রতি মিলিয়ন মানুষের মধ্যে আক্রান্তের হার ২২০ জনের বেশি। বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর হারে শীর্ষে থাকা দেশগুলোর তালিকায় কানাডার অবস্থান ১১তম; যা ইউরোপের অনেক দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি। কারফিউ প্রত্যাহার করল সৌদি আরব : করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে দীর্ঘদিন ধরে চলা কারফিউ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব সরকার। গতকাল থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে। সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার সকাল ৬ টা থেকে দেশের আর কোথাও কারফিউ থাকছে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক দেশে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু করা হবে, চালু করা হবে সব ধরনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম। সব ক্ষেত্রেই করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে প্রতিরোধমূলক এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে। তবে ওমরাহ হজ, ভ্রমণ ভিসা, বিদেশ থেকে আসা বা দেশ থেকে বিদেশে যাওয়াসহ সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ থাকবে। কারফিউ তুলে নিলেও জনসাধারণকে সামাজিক দূরত্ব মেনে, মাস্ক পরে বা নাক-মুখ ঢেকে চলাফেলার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন